যশোরের শার্শায় জলাশয়ের শামুক কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন নিম্নআয়ের সাত শতাধিক পরিবারের সদস্যরা। প্রতিকেজি ৪-৫ কেজি দরে বিক্রি হয় এসব শামুক।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শার্শা উপজেলার ডিহি, লক্ষ্মণপুর, বাহাদুরপুর, শার্শা সদর ও নিজামপুর ইউনিয়নের নিম্নআয়ের সাত শতাধিক পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুরা এলাকার বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়, জলাশয়ে সারাদিন শামুক কুড়ান। সারাদিনের কুড়ানো শামুক বিকেলে ইউনিয়নভিত্তিক নির্ধারিত বিভিন্ন স্থানে এনে জড়ো করেন। তারপর ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন তারা। প্রতিকেজি শামুক বর্তমান ৪-৫ টাকা দরে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই চলছে সংসার। শামুক সংগ্রহের কাজ চলে বছরের আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত।
তবে শামুক সংগ্রহকারীরা জানান, এ বছর জলাশয়ের পানি অত্যন্ত বিষাক্ত। পানিতে নামলে শরীর চুলকায়। তারপরও জীবিকার প্রয়োজনে বাধ্য হচ্ছেন পানিতে নামতে।
জলাশয় জলাশয় ঘুরে শামুক সংগ্রহের কাজ করেন নিজামপুর ইউনিয়নের পোতাপাড়ার অসিম তরফদার, গোড়পাড়ার স্বরূপ, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ঘিবার মন্তো, স্বরূপদাহ ওয়াপদাহর বাসিন্দা সখী এবং ডিহি ইউনিয়নের তেবাড়িয়া জেলেপল্লীর সন্তোষ ও শংকর।
Advertisement
তারা জানান, জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন জলাশয় থেকে শামুক কুড়ান। ব্যক্তিভেদে প্রতিদিন ২০-৫০ কেজি পর্যন্ত শামুক পান। পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনোমতে চলছে সংসার খরচ।
কথা হয় শামুক ব্যবসায়ী স্বরূপদহ ওয়াপদা খালপাড়ার সোহাগ, ইব্রাহিম ও আকরাম হোসেনের সঙ্গে। তারা জানান, শার্শার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের সাত শতাধিক নিম্নআয়ের পরিবারের কাছ থেকে প্রতিদিন ৮০-১০০ মণ শামুক কেনেন। এ শামুক তারা মনিরামপুর উপজেলার সাতনল কুমারঘাটা এলাকায় ঘের মালিকের কাছে বিক্রি করেন। এসব শামুক মেশিনে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
যশোর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম, অ্যালার্জি ও নখ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম মোর্তুজা জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন পরিষ্কার না হওয়ায় পানি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। যারা এসব পানিতে নামবেন তাদের শরীর চুলকাবে। যাদের শরীরে অ্যালার্জি আছে তাদের শরীর বেশি চুলকাবে। তবে ভয়ের কিছু নেই। অ্যালার্জির ওষুধ খেলে চুলকানি কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে ডাক্তার দেখাতে আসেন না। আমাদের কাছে এলে অবশ্যই চিকিৎসা দেওয়া হবে। তবে বিষাক্ত পানিতে না নামাই ভালো। বৃষ্টি হলে পানির বিষাক্ততা অনেকটা কেটে যায়।
Advertisement
জামাল হোসেন/এসআর/এএসএম