মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। এটি সেখানে জন্য আরও বড় সংকটের পূর্বাভাস দিচ্ছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
Advertisement
রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব দুর্যোগ’ উল্লেখ করে ইউএনডিপি বলেছে, পণ্য পরিবহন নিষেধাজ্ঞা, চরম মূল্যস্ফীতি, জীবিকার ক্ষতি, কৃষি উৎপাদন হ্রাস এবং জরুরি সেবার অভাবে ‘একটি নিখুঁত ঝড়’ তৈরি হচ্ছে। জরুরি পদক্ষেপ না নিলে রাজ্যটির প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ ‘জীবন রক্ষার লড়াইয়ে’ বাধ্য হবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন>>
মিয়ানমারে বেসামরিক লোকদের হত্যা-নির্যাতন বাড়িয়েছে সেনাবাহিনী বাংলাদেশে পালানোর সময় মিয়ানমারে ড্রোন হামলায় বহু রোহিঙ্গা নিহত বাংলাদেশ সীমান্তে আবারও রোহিঙ্গাদের ভিড়রাখাইনে বসবাসকারীদের বেশিরভাগই মুসলিম রোহিঙ্গা। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সামরিক অভিযানের মুখে তাদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। বর্তমানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
Advertisement
ইউএনডিপি জানিয়েছে, রাখাইনের অর্থনীতি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সামরিক জান্তার আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো সেখানে ‘সমষ্টিগত শাস্তি’ হিসেবে কাজ করছে। এর ফলে রাজ্যটির বাণিজ্য, কৃষি এবং নির্মাণ খাত প্রায় স্থবির হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় রাখাইনসহ গোটা মিয়ানমারের তরুণ সমাজের মধ্যে দেশত্যাগের প্রবণতা বাড়ছে, যা মানবপাচারের ঝুঁকি আরও বাড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেখানকার প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ এরই মধ্যে বিদেশে চলে গেছে।
ইউএনডিপি বলেছে, এই অভিবাসন প্রবণতাকে মোকাবিলা করা জরুরি, নাহলে দেশটির উৎপাদনশীলতা আরও কমে যেতে পারে।
ভেঙে পড়ছে মিয়ানমারের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ব্যবস্থাও। বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশনের মতো প্রয়োজনীয় সেবাগুলো এখন অনেকের জন্য বিলাসিতা হয়ে উঠেছে। শিশুদের বিদ্যালয় ত্যাগের হার বাড়ছে, বিশেষ করে রাখাইন ও পার্শ্ববর্তী চিন রাজ্যে।
Advertisement
ইউএনডিপি সতর্ক করে বলেছে, দক্ষ জনশক্তির অভাবে মিয়ানমারের উৎপাদনশীল সক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে সংকটকে আরও গভীর করবে।
সূত্র: ইউএন নিউজকেএএ/