শখ করে গিয়েছিলেন মাছ ধরতে। কিন্তু মাছ ধরতে গিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়ে যাবে, সেটা কোনোকালেই ভাবেননি ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইয়ান বোথাম। স্বস্তির কথা হলো, শেষ পর্যন্ত প্রাণ নিতে ফিরতে পেরেছেন বোথাম।
Advertisement
ঘটনা কয়েকদিন আগের। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার মার্ভ হিউজের সঙ্গে মাছ শিকার করতে যান বোথাম। অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় মোয়েলে নদীতে যান দুই বন্ধু মিলে। ক্রিকেটীয় জীবনে হিউজদের বিপক্ষে অনেকবার অ্যাশেজ ট্রফি খেলেছিলেন বোথাম। প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও তখন থেকেই তাদের ভালো সম্পর্ক।
মোয়েলে নদীতে ছিল প্রচুর কুমির। অন্যদিকে মাছ শিকার করতে গিয়ে নৌকার একেবারে কোণায় গিয়ে বসেন বোথাম। হঠাৎ নৌকা থেকে পড়ে যান তিনি। এরপর নিজের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তাকে উদ্ধার করেন হিউজ।
বলা যায়, বোথামকে প্রায় কুমিরের মুখ থেকে চিনিয়ে এনেছেন হিউজ। নৌকার তোলার পর বোথামের বেশকিছু আঘাতের চিহ্নও দেখা যায়।
Advertisement
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে লোমহর্ষক সেই বর্ণনা দেন বোথাম নিজেই। কীভাবে ঘটনা ঘটেছিল তার বর্ণনা দিতে গিয়ে বোথাম জানান, তিনি এবং হিউজ দুজনে নৌকায় করে মাছ ধরতে নদীতে গিয়েছিলেন। কিছুটা যাওয়ার পর তার জুতা দড়িতে আটকে যায়। হঠাৎ করে তিনি পানিতে পড়ে যান।
বোথাম বলেন, ‘দিন শেষে আমি কুমিরের পেটে যাওয়া থেকে বেঁচে ফেরা একজন। আমি যত তাড়াতাড়ি পানিতে পড়েছি; তার চেয়ে বেশি দ্রুত সময়ে উঠে এসেছি। পানিতে থাকা কয়েকটি কুমিরের চোখ মনে হচ্ছিল আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। ভাগ্যবশত, তাদের কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি পানি থেকে উঠে এসেছিলাম। ঘটনাগুলো খুব তাড়াতাড়ি ঘটে যায়। আমি এখন ঠিক আছি।’
ক্রিকেটীয় জীবনে বোথাম ও হিউজের লড়াই খুব জমত। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার মর্যাদাবান অ্যাশেজ সিরিজে বহুবার তারা মুখোমুখি হয়েছেন। কথার এক ফাঁকে সেই স্মৃতিও মনে করলেন বোথাম। ১৯৮০ সালের হিউজের এক ওভারে ২২ রান নেওয়ার কথাও মনে করেন বোথাম।
ইংল্যান্ডের জার্সিতে ১০২টি টেস্ট ম্যাচ খেলেন বোথাম। রান করেন ৫ হাজার ২০০। উইকেট নেন ৩৮২টি। এরপর ১৯৯২ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডার।
Advertisement
অন্যদিকে হিউজ অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে খেলেন ৫৩টি টেস্ট। রান করেন ১ হাজার ৩২। ডানহাতি পেসার উইকেট নেন ২১২টি। বোথামের দুই বছর পর ১৯৯৪ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন হিউজ।
ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পরও বোথাম ও হিউজের বন্ধুত্ব অটুট থেকেছে। দুজনেই মাছ ধরতে খুব ভালোবাসেন। বোথাম জানান, লন্ডনে মাছ শিকারের তেমন সুযোগ হয়ে ওঠে না। কান্ট্রিসাইডে সময় কাটাতেই বেশি ভালোবাসেন তিনি। সেই কারণে মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে।
এমএইচ/এএসএম