যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নের সেই শওকত আলী মণ্ডলের দলীয় মনোনয়ন বাতিল করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক আব্দুল মজিদ যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার বিকেলে এ সংক্রান্ত তিনটি দাপ্তরিক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী স্বাক্ষর করেছেন। চিঠিগুলি মঙ্গলবার নির্বাচনী রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পৌঁছে যাবে।একাধিক সংখ্যালঘু ও আওয়ামী লীগ নেতার খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী টুটুল বাহিনীর গডফাদার হিসাবে পরিচিত টুটুলের বড়ভাই শওকত বন্দবিলা ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির টিকিটে বিজয়ী হয়ে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিসেবেও ছিলেন দীর্ঘদিন।এরআগে শওকতকে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন শওকত পরিবারের নেতৃত্বাধীন টুটুল বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময়ে নিহত ও নির্যাতিত আওয়ামী নেতা, মুক্তিযোদ্ধা, সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। এনিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় দৈনিকসহ কিছু অনলাইনে প্রকাশিত ওই সংবাদ প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও মনোনয়ন বোর্ড যশোরের বন্দবিলায় দলীয় মনোনয়ন পুণর্মূল্যায়নের উদ্যোগ নেয়। সর্বশেষ সোমবার বিষয়টি দলের সভাপতি ও মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি শওকতের দলীয় মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশ দেন। এ ইউনিয়নে নতুন করে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা বাস্তুহারা লীগের সহ-সভাপতি সাইফুজ্জামান ভোলাকে।এদিকে, বন্দবিলায় সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী ও আওয়ামী বিরোধী রাজনীতির সূচনাকারী পরিবারের হাত থেকে ‘নৌকা’ কেড়ে নেয়ার খবরে উল্লাস প্রকাশ করেছেন স্থানীয়দের অনেকে। এখানে নতুন করে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সাইফুজ্জামান ভোলা বলেন, আমি দলের মনোনয়ন পেয়ে যতনা খুশি, তার চেয়ে অনেক বেশি খুশি শওকতের মত লোকের হাতে নৌকা তুলে দিয়ে এ এলাকায় যে কলঙ্কময় অধ্যায় সৃষ্টি হতে যাচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেটা রক্ষা পাওয়ায়।উল্লেখ্য, এই ভোলার বাবা মনু মাস্টার ছিলেন বাঘারপাড়া থানা (বর্তমান উপজেলা) আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। স্থানীয় যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ১৯৮৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকালে শওকতের ভাই টুটুলের নেতৃত্বে অস্ত্রধারীরা তাকে কুপিয়ে খুন করে।শওকতের মনোনয়ন বাতিলের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদও। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দিপঙ্কর দাস রতন বলেন, যেখানেই সাধারণ মানুষ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনকারী হিসেবে কারো দিকে আঙ্গুল তুলছে, প্রধানমন্ত্রী সেখানেই সন্তোষজনক ব্যবস্থা নিচ্ছেন। শওকতের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এতে আমরা সন্তুষ্ট।মিলন রহমান/ এমএএস/এবিএস
Advertisement