উচ্চমূল্যের বাজারে সীমিত আয়ে সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন দেশের বেশিরভাগ মানুষ। শহর কিংবা গ্রাম- কোথাও নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি মিলছে না। এমনকি শহরের চেয়েও গ্রামে খাদ্যপণ্যের দাম বেশি।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সেপ্টেম্বর মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, অক্টোবর মাসে শহরাঞ্চলে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। একই মাসে গ্রামাঞ্চলে এ হার ছিল ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফলে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ খাদ্যপণ্য কিনতে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অর্থাৎ শহরের চেয়েও বেশি কষ্টে আছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী।
আরও পড়ুন শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতির হার বেশি ফের বাড়লো মূল্যস্ফীতি, খাদ্যপণ্যেও অস্বস্তিঅন্যদিকে, পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে অক্টোবরে মজুরি সূচক বৃদ্ধির হার মাত্র ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। সুতরাং আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হচ্ছে মানুষের। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন অনেকে। কারণ, ব্যয় যে হারে বাড়ছে একই হারে আয় বাড়ছে না।
Advertisement
অক্টোবরে গ্রামে সাধারণ খাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ হয়েছে, যেখানে শহরের হার ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। মাসটিতে গ্রামে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ, অথচ এ খাতে শহরের হার ৯ দশমিক ০৬ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না আয়। যারা কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের মজুরি সূচক বৃদ্ধির হার অক্টোবরে ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ হয়েছে। যা আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ।
এছাড়া অক্টোবরে শিল্প খাতে মজুরি সূচক বেড়ে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে, যা আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। সেবা খাতে অক্টোবরে মজুরি সূচক বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্য মতে, গ্রাম ও শহরে নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে সেভাবে মানুষের আয় বাড়েনি। গ্রামের মানুষ সাধারণত কৃষি খাতে কাজ করেন। অন্যদিকে, শহরের মানুষ সেবা ও শিল্প খাতনির্ভর। অথচ মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির তুলনায় কোনো খাতেই সেভাবে আয় বাড়েনি।
Advertisement
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে এক অঙ্কের ঘরে নেমেছিল। ওই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। যা আগের মাস আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
সেপ্টেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতেও খানিকটা স্বস্তি ফিরেছিল। সেপ্টেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশে, যা আগস্টে ছিল ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তবে অক্টোবর মাসে ফের খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে ১০০ টাকার খাদ্যপণ্যে ১২ টাকা ৬৬ পয়সা বাড়তি খরচ করতে হয়েছে ভোক্তাদের।
বিবিএসের তথ্য বলছে, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।
এমওএস/এমকেআর/জিকেএস