মূলধনী মুনাফার ওপর করহার কমানোর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের শেয়ারবাজারে সাময়িক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। তবে মাত্র দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর ফের টানা দরপতন দেখা দিয়েছে শেয়ারবাজারে। ফলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের হতাশা বেড়েই চলেছে।
Advertisement
আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। এতে কমেছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
এর আগে শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতন দেখা দিলে গত সোমবার দুপুরে মূলধনী মুনাফার ওপর করহার কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ও মঙ্গলবার দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। কিন্তু বুধবার আবার দরপতন হয় শেয়ারবাজারে।
Advertisement
এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের শুরুতে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়লেও লেনদেনের মাঝে কয়েকবার সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। কিন্তু শেষ ঘণ্টার লেনদেনে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা।
আরও পড়ুন ফের পতনে শেয়ারবাজার অক্টোবরে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি হয়েছেমাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে একদিনে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকয়টি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৯৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৬ প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৪১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৫১ কোটি ২০ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১০৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
Advertisement
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে অগ্নি সিস্টেমের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪৫ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ২৪ টাকার। ১৯ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- গ্রামীণফোন, বেস্ট হোল্ডিং, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইসলামী ব্যাংক, ফারইস্ট নিটিং, ফার্মা এইড এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৭টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিন লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৩ লাখ টাকার। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৫ কোটি ২১ লাখ টাকা।
এমএএস/কেএসআর/এএসএম