দেশজুড়ে

মিরসরাইয়ে কৌশলে ভাতার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সুবিধাভোগীদের বিভিন্ন ধরনের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এছাড়া প্রায় সময় শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকাও হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি।

Advertisement

উপজেলার পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের বয়স্ক ভাতাভোগী হোরা মিয়া বলেন, গত সপ্তাহে আমার মোবাইলে (ইন্টারনেটের সংক্ষিপ্ত একটি নম্বর) কল দিয়ে নাম জানতে চাওয়া হয়। নাম বলার পর ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে বলছেন। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর নতুন করে ভাতার কার্ড করা হচ্ছে। আমি যেন জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ছবি ও ভাতা বই নিয়ে অফিসে যোগাযোগ করি। পরে আমার নম্বরে একটি কোড নম্বর এলে তিনি পুনরায় কল দিয়ে সেটি দিতে বলেন। আমি কোড নম্বরটি দিই। পরদিন ভাতার টাকা তুলতে গিয়ে দেখি আমার মোবাইল ব্যাংক একাউন্ট থেকে ভাতার ১৮০০ টাকা নেই। এভাবে আমাদের গ্রামের নুরুল ইসলাম প্রকাশ সুজা মাস্টার, হেলু সওদাগরসহ অনেকের টাকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। বিষয়টি আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।

উপজেলার মিঠানালা এলাকার গৃহবধূ সাফিয়া আক্তার বলেন, কয়েকমাস পূর্বে আমার ছেলের উপবৃত্তির টাকা নিয়ে গেছে একটি প্রতারক চক্র। পরে মোবাইল ব্যাংকিং অফিসে গিয়ে নতুন পিন নম্বর দেওয়ার পর ঠিক হয়েছে।

উপজেলা সহকারী সমাজসেবা অফিসার সাহাব উদ্দিন বলেন, উপজেলায় বয়স্ক ভাতা পায় ১৩ হাজার ৬২৫ জন, বিধবা ভাতা পায় চার হাজার ৭০০ জন, প্রতিবন্ধী ভাতা পায় ছয় হাজার ৯৮৮ জন।

Advertisement

২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বয়স্ক ভাতা ৬০০ টাকা করে ১৮০০ টাকা, বিধবা ভাতা ৫৫০ টাকা করে তিন মাসের ১৬৫০ টাকা, প্রতিবন্ধী ভাতা ৮৫০ টাকা করে ৩ মাসের দুই হাজার ৫৫০ টাকা একসঙ্গে পাবেন। গত অক্টোবর মাসের শেষ দিকে আর নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বয়স্ক ও বিধবার ভাতার টাকা ভাতাভোগীর মোবাইল নম্বরে নগদের মাধ্যমে জমা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে প্রতিবন্ধী ভাতা জমা হবে।

তিনি আরও বলেন, ভাতার টাকা জমা হওয়ার পর হ্যাকাররা ভাতাভোগীদের নম্বরে কল দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও বই উপজেলায় আনার কথা বলে ওটিপি কোড পাঠাচ্ছে বলে কয়েকজনের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। গ্রাহক থেকে কোড নিয়ে নম্বর হ্যাক করে ভাতার টাকা তুলে নেয় একটি প্রতারকচক্র। গত কয়েকদিনে প্রতিদিন ৮-১০ জন করে ভাতাভোগী টাকা খুঁইয়ে অফিসে এসে অভিযোগ দিয়েছেন। কেওয়াইসি পদ্ধতিতে গ্রাহকরা যদি পিন নম্বর পরিবর্তন করে নেন এবং কাউকে পিন নম্বর না বলেন তাহলে হ্যাকাররা আর সুযোগ পাবে না।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাবরিনা রহমান লিনা বলেন, সমাজসেবা অফিস থেকে কোনো ভাতাভোগীকে কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য ফোন দেওয়া হচ্ছে না। হ্যাকাররা প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে ফোন দিচ্ছে।

এম মাঈন উদ্দিন/আরএইচ/জেআইএম

Advertisement