শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে অবশেষে জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান ‘মেইনবার্ডস লেক’ পাড় থেকে সরছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা অনুষদ ভবনের নির্মাণ কাজ। অন্য জায়গায় নির্মাণ করা হবে চারুকলা অনুষদ ভবন।
Advertisement
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় ভবনটি স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এসময় ভারত সরকারের অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে দেশীয় অর্থায়নে ভবন নির্মাণের বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে বলে জানানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আপত্তি থাকায় চারুকলার নির্মাণাধীন ভবনের বিষয়ে একটি সভা হয়েছে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, চারুকলা ভবনের জন্য পূর্বনির্ধারিত স্থানটি বাদ দিয়ে নতুন স্থান নির্ধারণ করা হবে। তবে এ প্রকল্পে এরইমধ্যে ব্যয় করা অর্থের ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
তিনি আরও জানান, তাকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি সবার মতামতের ভিত্তিতে নতুন স্থান নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।
সভায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ ও লেকের পাশেই বন উজাড় করে চারুকলা ভবন নির্মানের স্থান পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছি। সেসময় ছাত্রলীগের উপস্থিতিতে তারা ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা করেন। কিন্তু আমরা যৌক্তিক দাবিতে অনড় ছিলাম। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে কর্তৃপক্ষ ভবন স্থানান্তরে সম্মত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা ভবন নির্মাণের বিপক্ষে নই, তবে প্রাণ-প্রকৃতি বিপর্যস্ত করে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ চাই না।
চলমান এ প্রকল্পে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দের কার্যাদেশ হয়েছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের ওপর ভারতীয় আধিপত্যবাদী আচরণের অভিযোগ তুলে ভারতীয় অর্থায়নের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করে আসছেন আধিপত্যবিরোধী মঞ্চের শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
এ বিষয়ে মঞ্চের আহ্বায়ক শাহারিয়ার আঞ্জুম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভারত সবসময়ই বাংলদেশের জন্য একটি আধিপত্যবাদী শক্তি। আমরা চাই চারুকলা ভবন হোক, তবে সেটা ভারতীয় অর্থায়নে নয়। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে বা বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে হোক।’
সৈকত ইসলাম/এসআর/জিকেএস