আবারও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস তৈরি করলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার রাতে হলিউডের অনেক মানুষ চিন্তিত ছিলেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে পারবেন কি না। রাত শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্প একাধিক রাজ্যে জিতেছিলেন। সেই খবরে হলিউডের অনেক তারকাই উদ্বিগ্ন ছিলেন। কারণ শোবিজের সবচেয়ে বড় অংশটি এবার কমলা হ্যারিসের পক্ষেই প্রচারণায় সরব ছিলেন।
Advertisement
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিক ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন তিনি। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউজের দখল পাচ্ছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট।
তার জয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হলিউড তারকারা প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছেন। অনেকে ট্রাম্পকে শুভেচ্ছার পাশাপাশি ফলাফলে হতাশ হয়েছেন বলে জানাচ্ছেন। তারা ট্রাম্পের দ্বিতীয় শাসনের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন না। অনেকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরক্ত ছিলেন। তাদের নির্বাচনী কৌশল নিয়েও আপত্তি ছিল অনেকে। সব ছাপিয়ে ট্রাম্পই এখন গ্রেট আমেরিকার শাসক।
অ্যাডাম ম্যাককে একজন পরিচিত চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি টুইট করে বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা অনেক ভুল করেছে। যেমন বাইডেনের স্বাস্থ্যের বিষয়ে মিথ্যা বলা, নতুন মনোনীত প্রার্থী নির্বাচন না করা এবং ফ্র্যাকিংকে সমর্থন করা। এই ভুলগুলোর কারণে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন।’ ম্যাককে আরও বলেন, ‘লিবারেলরা একসময় বুদ্ধিমান ছিল, কিন্তু এখন তারা শুধু খারাপ ধারণাকে সুন্দর শব্দে ঘিরে সমর্থন করে।’
Advertisement
সাংবাদিক এবং বেনি স্যান্ডার্সের প্রাক্তন উপদেষ্টা ডেভিড সিরোতা বলেন, ডেমোক্র্যাটরা শ্রমজীবী মানুষের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। এটাই তাদের নির্বাচনী পরাজয়ে অবদান রেখেছে। তিনি বলেন, ‘অনেকেই ডেমোক্র্যাটদের এই বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু তাদের উপেক্ষা করা হয়েছে।’
অভিনেত্রী ক্রিস্টিনা অ্যাপলগেট টুইট করে বলেন, তিনি মহিলাদের অধিকারের ভবিষ্যত নিয়ে ভয় পাচ্ছেন। তিনি বলেন, তার সন্তান কাদছে কারণ তারা আতঙ্কিত যে ট্রাম্পের দ্বিতীয় শাসনে তাদের অধিকার হারাতে হতে পারে। তিনি খুবই অসন্তুষ্ট।
চলচ্চিত্র শিল্পের নেতা ফ্র্যাঙ্কলিন লিওনার্ড ট্রাম্পের শাসনকালের কতটা উন্মাদ ছিল তা সবাইকে মনে করিয়ে দেন। দ্য ওয়ার সিরিজের স্রষ্টা ডেভিড সাইমন বলেছেন, নির্বাচনের পর সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এক্স (পূর্বে টুইটার) মিথ্যা এবং ঘৃণায় পূর্ণ হয়ে যাবে। তিনি এই সাইটটি ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
অভিনেতা উইন্ডেল পিয়ার্স সতর্ক করেছিলেন যে দ্বিতীয় ট্রাম্প শাসন সুপ্রিম কোর্টের জন্য দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনবে এবং তা আরও রক্ষণশীল হয়ে উঠবে। সেটাই হতে যাচ্ছে। অভিনেত্রী ইয়েভেট নিকোল ব্রাউন অত্যন্ত বিরক্ত ছিলেন যে তার নিজস্ব রাজ্য ওহাইতে ট্রাম্প অনেক ভোট পেয়েছে। এটি একটি শোচনীয় ঘটনা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Advertisement
অভিনেতা জন কুসাকও আমেরিকাকে আবার ট্রাম্পকে বেছে নেওয়ার জন্য সমালোচনা করেন। তিনি আমেরিকাকে ‘অপরাধী’ বলে অভিহিত করেন।
লেখক ফিলিপ পুলম্যান বলেছেন, ‘বিদায়, আমেরিকা। তোমার সঙ্গে পরিচিত হওয়া ভালো ছিল।’
অভিনেতা পল ওয়াল্টার হাউসার মজারভাবে বলেছেন, তার সকালের নাস্তা ছিল ডাবল স্টাফড ওরিওস এবং একটি সিগারিলো। যারা তার সুস্থতা নিয়ে চিন্তা করছেন তাদের জন্য এটি একটি সিগন্যাল। কমেডিয়ান ডেসুস নাইস আমেরিকার বিপজ্জনক পথ বেছে নেওয়ার ব্যাপারে রসিকতা করেছেন। কমেডিয়ান ট্রাভন ফ্রি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে সমালোচনা করেছেন এজন্য যে তারা ট্রাম্পকে কমলার তুলনায় ভাল বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
অভিনেতা কেভিন ম্যাকহেল ভয় পাচ্ছেন, ট্রাম্পের জয় সুপ্রিম কোর্টে বড় পরিবর্তন আনবে এবং জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার বৃদ্ধি ঘটাবে।
এলএ/জিকেএস