কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে তারা কমিটি বাতিলের দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন।
Advertisement
এসময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই কমিটি বাতিল করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সমবেত হন জেলা বিএনপির সাবেক কমিটির কয়েকজনসহ বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। পরে তারা সেখান থেকে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক এনএস রোডে বিক্ষোভ মিছিল করে মজমপুর গেটে সমাবেশ করেন। এসময় শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
সমাবেশে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীমুল হাসান অপু বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি কতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক ও জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে যে কমিটি ঘোষণা করেছিল তাতে পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও আমরা প্রতিক্রিয়া দেখাইনি। কেন্দ্রীয় কমিটি যেটা ভালো মনে করেছে, তা মেনে নিয়েছিলাম। আমরা তাদের কাছে গেছি, ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। ভেবেছিলাম তারা সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করবে। কিন্তু আমাদের সেই ভাবনা ভুল ছিল। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব মিলে নিজেদের লোকজন দিয়ে ৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি দিয়েছেন, যা আমাদের মতো বহু নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ধ্বংসের নীলনকশা। আমরা তা বাস্তবায়ন হতে দেবো না।
Advertisement
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ত্যাগীদের এই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি। বরং যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলেমিশে ব্যবসা করেছেন তারাই স্থান পেয়েছেন। জেলার তিনজন সাবেক সংসদ সদস্যকেও এই কমিটিতে সদস্য পদ দিয়েও রাখা হয়নি। যেটা স্পষ্ট ষড়যন্ত্র।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার, মিরাজুল ইসলাম রিন্টু, ভেড়ামারা কলেজের সাবেক ভিপি নুরুল ইসলাম নুরু, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ হাবলু মোল্লা ও কুমারখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ।
এদিকে কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব জাকির হোসেন সরকার বলেন, যারা বিক্ষোভ করলেন, তাদের মধ্যে আমাদের মাত্র সাতজন ছিলেন। বাকিদের তো চিনতে পারলাম না। যদি আপনারা চেনেন, আমাদের জানাবেন।
অপরদিকে জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা নিজেকে পদবঞ্চিত মনে করেন, তাদের রাস্তাঘাটে হইচই না করে সঠিক উপায়ে দাবি জানানোর আহ্বান জানাই। আহ্বায়ক কমিটি ছোট একটা কমিটি। চাইলেও সবাইকে সেখানে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। পৌরসভা-উপজেলাসহ ১১টি ইউনিট আমাদের। সবার প্রতিনিধিত্বের প্রশ্ন আছে।
Advertisement
কাউন্সিল করে যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে, তখন ত্যাগী বিবেচনায় সবাইকে স্থান দেওয়া সম্ভব হবে বলেও জানান জেলা বিএনপির সর্বোচ্চ এই নেতা।
গত ৩ নভেম্বর কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক ও প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। পরে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।
আল-মামুন সাগর/জেডএইচ/জিকেএস