ফিচার

যে দেশের এক প্রান্তে রাত তখন অন্য প্রান্তে দিন হয়

পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে, পুরো একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা। ফলে এক দেশে সকাল হলে তার বিপরীত পাশের দেশে রাত। তবে একই দেশে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে কেমন হবে বলুন তো। যখন দেশের একপ্রান্তের মানুষ ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা করছেন তখন অন্যপ্রান্তে রাতের খাবার খাচ্ছেন।

Advertisement

শুধু তাই নয়, এখানকার অর্ধেক অংশে যখন দিন হয়, তখন অন্য অর্ধেক অংশে থাকে রাত। পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে সকাল এবং রাত একসঙ্গে থাকে। সময় অনুযায়ী এখানকার একটি অংশে যখন কেউ সকালের চা খাচ্ছেন, আবার অন্য জায়গায় কেউ হয়তো খেতে বসেছেন রাতের খাবার।

শুনলে অবাক হবেন, এই দেশটির অর্ধেক অংশে যখন দিন, তখন অন্য অংশে হয় রাত। এই প্রবণতা থাকে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত, প্রায় ৭৬ দিন। তাই এই দেশকে বলা হয় ‘কান্ট্রি অব মিডনাইট সান’ বা মধ্যরাতে সূর্যোদয়ের দেশ।

আরও পড়ুনদেড় কোটি জনসংখ্যার দেশে ৮৫০ ভাষা

বলতে পারবেন, কোন সেই দেশ? নামটি শুনলে কিন্তু খানিক অবাকই হবেন। সেই দেশটি হল রাশিয়া। আয়তনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশও এই রাশিয়া। রাশিয়ার একটি শহর হল মরমস্ক। এখানে গ্রীষ্মকাল দীর্ঘস্থায়ী। সেই সময় দিনরাতের অনুভূতি এখানে একেবারে থেমে যায়। সূর্য খুব উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এবং মানুষ দিন ও রাতের অনুভূতি একেবারে ভুলে যান। রাশিয়ার এই শহরটিতে সূর্য কখনো অস্ত যায় না, সেটি কেবল আকাশজুড়ে ঘুরে চলে।

Advertisement

রাশিয়া বিশ্বের সর্বপ্রথম বৃহত্তম দেশ এবং প্রথম শীতলতম দেশ বলে এ দেশে সারাবছর হিমশীতল এবং শৈত্যপূর্ণ থাকে। অতিরিক্ত আর্কটিক বরফাচ্ছন্নের, অতি উচ্চভূমি এবং রুশ প্রকৃতির দ্বারা শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি হয় এবং সারাদিন শৈত্যপ্রবাহ চলতে থাকে।

এই দেশে বছরে ১০ মাস শৈত্যপ্রবাহ (সেপ্টেম্বর-মে) এবং ৮ মাস বরফাচ্ছন্ন (অক্টোবর-এপ্রিল) হয়ে থাকে। রাশিয়ার সাইবেরিয়া এলাকায় সারাদিন ঠান্ডা ও শৈত্যপ্রবাহ থাকে এবং পশ্চিম-দক্ষিণাংশে গরম থাকে। যার ফলে, রাশিয়া দেশটি হাড়কাঁপানি ঠান্ডা বলে পরিচিত। এখানে থাকাটা খুবই কষ্টকর এবং প্রতিকূল

এদেশের আরেকটি মজার বিষয় হলো, এখানে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। অর্থাৎ এখানে নারীদের প্রাধান্য অধিক। একটা সময় ছিল যখন এদেশের মানুষ দাড়ি রাখতে পারতেন না। নিয়ম ভঙ্গ করলে দিতে হত জরিমানা।

রাশিয়া পশুপ্রেমী দেশ। এদেশের মানুষ পশুদের যে শুধু ভালই বাসেন তা নয়, পশুদের বিশেষ যত্নও নেন। এদেশে মানুষের জন্য থাকার ঘর থাকুক বা না থাকুন, শিয়ালদের থাকার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা রয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন৫০০ বছরেও যে বই পাঠোদ্ধার করতে পারেনি কেউবাস নম্বর ৩৭৫-এর রহস্য আজও অজানা

সূত্র: বিবিসি

কেএসকে/জেআইএম