দেশজুড়ে

মাদারীপুরে বেড়েছে ছিনতাই-চুরি

হঠাৎ করে মাদারীপুর শহরে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। শহরের মধ্যে প্রায় ১৫-২০টি স্পটে ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে। এমনকি অনেক বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটেও দিন-দুপুরে চুরি হচ্ছে।

Advertisement

একাধিক সূত্রে জানা যায়, শহরের এমএম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরির সামনে, মাদারীপুর শহরের আমিরাবাদ, বাদামতলা, মিলন সিনেমা হল এলাকা, ইউআই স্কুল রোড, তরমুগিরয়া, পুরান বাজার, রকেটবিড়ি, চৌরাস্তা, লঞ্চঘাট এলাকা, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, নতুন বাসস্ট্যান্ডসহ ১৫ থেকে ২০টির মতো স্থানে প্রতিনিয়তই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।

রাতে কোনো যাত্রী ঢাকা বা অন্য কোনো স্থান থেকে বাসে করে এসে, বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশায় বা পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় প্রায় ছিনতাইয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া ভোরে ব্যবসায়ীরা মালামাল কেনার জন্য মাদারীপুরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পুরানবাজার কিংবা মস্তফাপুরের আড়তে যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।

এছাড়া ভোরে অনেকেই হাঁটতে বের হন। তারাও ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছেন। বিশেষ করে নারীরা হাঁটতে বের হলে তাদের স্বর্ণের চেন, কানের দুল, চুড়ি ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি শহরের অনেক বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটেও ঘটছে চুরির ঘটনা।

Advertisement

মাদারীপুর শহরের লেকপাড়ের সবজি বিক্রেতা মোতালেব মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে আমি ভোরে সবজি কিনতে পুরানবাজার যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে এমএমএম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরির সামনে এলে কয়েকজন মুখোশ পরা যুবক আমার পথরোধ করে। দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে আমার কাছে থাকা ৩১ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি বাচ্চু মোল্লা বলেন, ৫ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে পৌরসভার সামনের এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলি। এরপর মোটরসাইকেল চালিয়ে বাসায় ফেরার পথে মুখোশধারী কয়েকজন যুবক নগদ টাকা, মোবাইল নিয়ে যায়।

শকুনি এলাকার গৃহকর্মী নাজমা বেগম বলেন, আমি ভোরে এক বাসায় কাজ করতে বের হই। এসময় আমার পাশ দিয়ে একটি মোটরসাইকেল চালিয়ে তিন যুবক যেতেই আমার গলায় থাকা একটি চেন টান দিয়ে নিয়ে যায়।

ভোরে হাঁটতে বের হওয়া ইসমত আরা বেগম বলেন, আমি ডায়াবেটিসের রোগী। তাই প্রতিদিন হাঁটতে বের হই। ২০ অক্টোবর ভোরে একা হাঁটতে বের হলে, মোটরসাইকেলে থাকা দুজন যুবক এসে আমার গলা থেকে চেন ও হাতের মোবাইল নিয়ে চলে যায়।

Advertisement

শহরের ২ নম্বর শকুনি এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি বর্তমানে একটি ব্যাংকে চাকরি করি। আমার স্ত্রী মাঝেমধ্যে কাজের প্রয়োজনে ঢাকায় যান। অনেক সময় ভোরে আমরা দুজন হাঁটতে বের হলে, চুরির ঘটনা ঘটে। গত এক বছরে আমার বাসায় দিনের বেলায় তালা ভেঙে চারবার চুরি হয়েছে। শহরের মধ্যেই আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এভাবে চুরি হলে কোথায় যাবো।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ভাস্কর সাহা বলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টহল বাড়ানো হচ্ছে। এরই মধ্যে তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ফাঁড়িতে সদস্যরা যোগদান করেছেন। আশা করছি, এই চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা শিগগির কমে আসবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/জেডএইচ/জেআইএম