দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ করে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে আরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
Advertisement
সোমবার (৪ নভেম্বর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং-সিক সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও বিস্তৃত এবং উন্নত সম্পর্কের প্রত্যাশা করছি এবং আমাদের বিদ্যমান সম্পর্ককে পরবর্তী ধাপে উন্নীত করতে চাই।
কোরীয় উপদ্বীপের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং-সিক বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সৈন্য মোতায়েন এবং সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। প্রধান উপদেষ্টা কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
Advertisement
রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের ইতিবাচক ব্যবসায়িক পরিবেশে অনেক দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহী। তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ খাতে কর্মী নিয়োগে আগ্রহী। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক কোম্পানি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পোশাক কারখানা পরিচালনা করছে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিলের (ইডিসিএফ) সবচেয়ে বড় প্রাপক দেশ এবং বাংলাদেশ কোরিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার।
বাংলাদেশের জন্য ইডিসিএফের মোট ঋণ সহায়তার পরিমাণ তিন বিলিয়ন ডলার, যা ৩৪টি প্রকল্পে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া ইডিসিএফের অধীনে ১৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে বা সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। এর ফলে কোরিয়ান বিনিয়োগের পরিমাণ ৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
‘আমরা বিদ্যমান প্রকল্পগুলো বিঘ্নিত না করে অব্যাহত রাখতে আশাবাদী,’ বলেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত।
Advertisement
‘মাত্র ৫০ বছর আগে কোরিয়া নিজেও একটি ওডিএ (সরকারি উন্নয়ন সহায়তা) গ্রহণকারী দেশ ছিল। তাই আমরা বাংলাদেশের কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত এবং উন্নয়ন অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আমরা ভালো অংশীদার হতে পারি,” বলেন রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং-সিক।
তিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে একটি ইপিএ (অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি) দ্রুততার সঙ্গে সম্পাদনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতি কোরিয়ার অব্যাহত সমর্থনের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মুরশেদ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এমইউ/বিএ/এমএস