নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নাম পাঠাতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ। রোববার (৩ নভেম্বর) ইসি গঠনে নাম আহ্বান করে সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি। কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও কেউ ব্যক্তিগতভাবে আগামীর ৭ নভেম্বরের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নাম দিতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে।
Advertisement
পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্তসহ প্রস্তাবিত নাম সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বা ই-মেইলে (gfp_sec@cabinet.gov.bd) পাঠানো যাচ্ছে। নাম আহ্বানের পর প্রথম দিন আজ সোমবার (৫ নভেম্বর) দেখা গেছে, ই-মেইলে অনেক নাম এসেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন সিনিয়র সহকারী সচিবকে মেইল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সরাসরি কেউ নাম জমা দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে আসেননি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রথম দিন মেইলে কতটি নাম এসেছে সেই বিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
গত নির্বাচন কমিশনও একই পদ্ধতিতে গঠিত হয়। তখন গুরুত্বপূর্ণ দলগুলো জানিয়েই নাম জমা দিয়ে আসতো। দলগুলোর প্রতিনিধিরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নাম জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলতেন।
Advertisement
রোববার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে সার্চ কমিটি জানিয়েছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদানের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করতে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি আগ্রহী ব্যক্তিদের নাম আহ্বান করছে।
এতে বলা হয়, রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন আগামী ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে সুপারিশ করার জন্য সর্বোচ্চ পাঁচজনের নাম প্রস্তাব করতে পারবে। ব্যক্তিগত পর্যায়েও আগ্রহী ব্যক্তিরাও তাদের নিজ নিজ নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।
আরও পড়ুন
নির্বাচন কমিশন গঠনে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি ইসি গঠনে ৭ নভেম্বরের মধ্যে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি ‘ইসি গঠনে আইন অনুযায়ী সৎ, নির্ভীক ও দক্ষ লোক নিয়োগ হবে’গত ৩১ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দিতে সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি গঠন করে সরকার।
Advertisement
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে ছয় সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটির সভাপতি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক সদস্য হলেন- বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার।
এছাড়া আইন অনুযায়ী পদাধিকারবলে সদস্য হিসেবে আছেন বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম এবং পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।
অনুসন্ধান কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওইদিনই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা। পরদিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। পরে ৮ আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।
পরে গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ও অন্য কমিশনাররা পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আরএমএম/বিএ/এমএস