আন্তর্জাতিক

স্পেনে রাজা-রানির গায়ে কাদা ছুড়লো ক্ষুব্ধ জনতা

বন্যাকবলিত ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশ পরিদর্শনে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লেন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ এবং রানি লেতিজিয়া। তাদের গায়ে কাদা ও অন্যান্য বস্তু ছুড়ে বিক্ষোভ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। ভিডিওতে দেখা যায়, পায়পোর্টা শহরে স্প্যানিশ রাজা-রানির গায়ে কাদা ছুঁড়ে এবং তাদের ‘মার্ডারার’ (হত্যাকারী) ও ‘শেম’ (লজ্জা) বলে চিৎকার করছে একদল ক্ষুব্ধ মানুষ। এসময় মুখ ও পোশাকে কাদামাটি লেগে থাকা অবস্থাতেই রাজা-রানি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন।

Advertisement

স্পেনে সাম্প্রতিক বন্যায় এখন পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্গত অঞ্চলগুলোতে উদ্ধারকর্মীরা এখনো পার্কিং এলাকা ও টানেলগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছেন। বলা হচ্ছে, এটি দেশটিতে কয়েক দশকের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা।

আরও পড়ুন>>

স্পেনে আকস্মিক বন্যায় ৫১ জনের মৃত্যু স্পেনে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫, রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা স্পেনে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ালো

তবে বন্যার পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থতা ও পর্যাপ্ত সহায়তার অভাবের অভিযোগ উঠেছে স্প্যানিশ সরকারের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

Advertisement

বিবিসি জানিয়েছে, বিক্ষোভের সময় রাজা ফিলিপের নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশ সদস্যরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও জনতার আক্রোশের মুখে তারা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। সানচেজের গাড়ির দিকে পাথরও ছুঁড়ে মারতে দেখা গেছে। এর পরপরই জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করে ‘সানচেজ কোথায়?’ বলে চিৎকার করতে থাকে।

১৬ বছর বয়সী পাউ নামের এক কিশোর জানায়, আমি তো মাত্র ১৬ বছরের, আমরা এখানে সহায়তা করছি – কিন্তু নেতারা কিছুই করছেন না। এখনো মানুষ মারা যাচ্ছে। এসব আর সহ্য করতে পারছি না।

এক নারী অভিযোগ করেন, ওরা আমাদের মরতে দিয়েছে। আমরা সবকিছু হারিয়েছি – আমাদের ব্যবসা, বাড়িঘর, স্বপ্ন।

প্রধানমন্ত্রী সানচেজ গত শনিবার ১০ হাজার সৈন্য, পুলিশ এবং সিভিল গার্ড সদস্যকে দুর্গত এলাকায় পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং একে স্পেনের শান্তিকালীন বৃহত্তম মোতায়েন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, এই সহায়তা যথেষ্ট নয় এবং সেবা প্রদানে মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে।

Advertisement

রাজা ফিলিপ পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, বিক্ষোভকারীদের রাগ ও হতাশা আমি বুঝতে পারছি।

তবে স্থানীয় পার্লামেন্ট সদস্য হুয়ান বোর্দেরা এই সফরকে ‘খুবই খারাপ সিদ্ধান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, সরকার সতর্কতাগুলো উপেক্ষা করেছে এবং মানুষের মধ্যে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আজ দেখা গেছে।

সূত্র: বিবিসিকেএএ/