দেশজুড়ে

‘ঘুস নিয়ে’ পালালেন প্রধান শিক্ষক, সেনা হস্তক্ষেপে পরীক্ষা সম্পন্ন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় একটি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬টি পদে নিয়োগ নিয়ে অবৈধ টাকা লেনদেনের অভিযোগে তোপের মুখে পালিয়ে যান প্রধান শিক্ষক। পরে সেনাবাহিনীর সহাযোগিতায় ৪টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।

Advertisement

এদিকে পরীক্ষা নিতে বাধা প্রদান ও হট্টগোল করায় ৪ জনকে আটকের পর প্রত্যেককে এক হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার কান্দিগাঁও গ্রামে নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক, কম্পিউটার অপারেটর, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। শনিবার সকাল ১০টায় নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আবেদনকারীদের ডাকা হয়। কিন্তু এর আগেই কয়েকজন প্রার্থীর পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে।

তাদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় কুমার চন্দ কারো কারো কাছ থেকে নিয়োগের জন্য ঘুস হিসেবে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন। এখন টাকা নেওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে না বুঝতে পেরে প্রধান শিক্ষক পালিয়ে গেছেন। এ অবস্থায় পরীক্ষা স্বচ্ছ হবে না অভিযোগ করে স্থানীয় লোকজন নিয়ে তারা পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে হট্টগোল শুরু করেন।

Advertisement

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত সভাপতি ও মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা এবং নিয়োগ সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও কিছু লোক তা অগ্রাহ্য করে চরম হট্টগোল করতে থাকেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে ইউএনও সেনাবাহিনীকে অবহিত করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে সেখান থেকে নিয়োগ পরীক্ষায় বাধা প্রদানের অভিযোগে ৪ জনকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করে।

পরে দুপুর ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর সহাযোগিতায় ৪টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। বাকি সহকারী প্রধান শিক্ষক ও আয়া পদে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রার্থী না থাকায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়।

এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক মলয় কুমার চন্দের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাকে প্রাথমিকভাবে বরখাস্ত করার কথাও জানান তিনি।

Advertisement

মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, ৪ জনকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত আটক প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়ে ছেড়ে দেন।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম