দেশজুড়ে

মুখোমুখি দুই গ্রুপ: মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম স্থগিত

যশোরের মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার (২ নভেম্বর) জেলা বিএনপি এ সিদ্ধান্ত নেয়।

Advertisement

বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলা। এ নিয়ে শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের লাগাম টানতে শনিবার রাতে (২ নভেম্বর) উপজেলা কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা বিএনপি।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের কার্যক্রম নিয়ে নানাবিধি অভিযোগ এসেছে। কেন্দ্র থেকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়। আমরা উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম স্থগিত করেছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

জানা যায়, দল ক্ষমতায় না থাকলেও কয়েক বছর ধরে উপজেলা বিএনপির মধ্যে দ্বিধা-বিভক্ত রয়েছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল ও অন্যপক্ষের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুছা। তবে ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়ার পর এই গ্রুপিং দ্বন্দ্ব আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

নেতাকর্মীদের ভাষ্য, নেতাকর্মীদের প্রতিশোধ পরায়ন, এলাকায় চাঁদাবাজি, দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়েই মূলত এই দ্বন্দ্ব। এ বিরোধ পৌঁছেছে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত। সেই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে পৌরশহরের রাজগঞ্জ মোড়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। একটি ওয়াজ মাহফিলে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে এটিকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষ দ্বৈন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মো. মুছা পক্ষের উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টুর ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর, লুটপাট ও আসবাবপত্র বের করে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

একই পক্ষের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মাসুদ রানার দোকান ভাঙচুর ও সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে মুছা পক্ষের অনুসারীরা উপজেলা বাজারে শোডাউন ও অবস্থান নেয়। তার প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার পর বাজারে অবস্থান ও শোডাউন দেয় ইকবাল গ্রুপ। এ সময় মুছা পক্ষের উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টুর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে বাজারে কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে ইকবাল গ্রুপ। পরে সেনাবাহিনী আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

Advertisement

ইকবাল পক্ষ ও মুছা পক্ষের নেতাকর্মীরা পৌরশহরে মিছিল বের করলে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠে। আতংকে সাধারণ লোকজন ছুটাছুটি শুরু করে। দোকানপাটও বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। পাল্টাপাল্টি হামলা, ভাঙচুর, ফাঁকা গুলি ও বোমাবাজির ঘটনায় আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয় মণিরামপুর। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে দুই গ্রুপের শীর্ষ নেতারা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।

মিলন রহমান/এফএ/এমএস