অর্থনীতি

অর্থনীতি সমিতিকে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন বানিয়েছিল বারকাতচক্র

পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে ড. আবুল বারকাত, ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, ড. মো. আইনুল ইসলাম, ড. জামাল উদ্দীন আহমেদ, প্রফেসর হান্নানা বেগমের সমন্বয়ে একটি চক্র বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতিকে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন বানিয়ে ফেলেছিল। তারা সমিতির নানান পদ ও ভাবমূর্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালক হয়ে অবৈধ ঋণ প্রদান, বিদেশে টাকা পাচারের পাশাপাশি ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তন করে ব্যাংকগুলো ধ্বংস করেছেন।

Advertisement

শনিবার রাজধানীর ইস্কাটনে বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির উদ্যোগে গঠিত অ্যাডহক কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, নিষিদ্ধঘোষিত কমিটির অধীনে গত ১৭-১৮ মে যে নির্বাচন হয়েছিল, তা ছিল প্রহসনের নির্বাচন। মোট ভোটার ছিল প্রায় সাড়ে আট হাজার। এরমধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র আটশ। তার মধ্যে কুষ্টিয়া থেকে দুই বাস এবং ময়মনসিংহ থেকে এক বাসভর্তি ভোটার ভোট শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে এসে ভোট দিয়ে যায়। এরা ছিল সব ভাড়াটে ভোটার। অনেকের সমিতির সদস্য হবার যোগ্যতা নেই। এভাবে তারা প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে।

প্রসঙ্গত, নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন অ্যাডহক কমিটি গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সমিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এরপর থেকে আগের কমিটির সদস্যরা সমিতির কার্যালয়ে যাননি। তাদের অবাঞ্চিতও ঘোষণা করা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাবেক সভাপতি ড. আবুল বারকাত সমিতিকে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সজ্ঞানে হাজার হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ দিয়ে জনতা ব্যাংককে ধ্বংস করেছে।

সহ-সভাপতি ড. জামাল উদ্দীন আহমেদ জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়ে নতুন করে আবার খেলাপি ঋণ দিয়ে জনতা ব্যাংককে দ্বিতীয় দফা ধ্বংস করেন।

ড. আবুল বারকাত শেখ হাসিনাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার জন্য লবিষ্ট নিয়োজিত হয়ে ৩৫ জনের দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, জার্মানি ভ্রমণ করে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার অপচয় করেছেন।

বিগত জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই ড. বারকাত, ড. আইনুল, ড. খলীকুজ্জামান চক্র বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ব্যানারে একটি তথাকথিত গবেষণার মাধ্যমে নির্বাচনের আগাম ফলাফল প্রকাশ করেছিলেন। যাতে বলা হয়েছিল আওয়ামী লীগ নির্বাচনে ২৭৩ আসন পাবে। আওয়ামী লীগ আমলের নির্বাচনের ফলাফল, ভোটার উপস্থিতি, জালভোট প্রদান, ভোট গণনা প্রভৃতির ক্ষেত্রে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং হয়েছে। এর পেছনে অর্থনীতি সমিতির ওই নেতাদের ভূমিকা ছিল।

Advertisement

ড. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, অ্যাডহক কমিটি সমিতিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করে সব সদস্যের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন উপহার দেবে। সমিতির কার্যক্রমে বস্তুনিষ্ঠতা এবং দেশপ্রেম ফিরিয়ে আনবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বিনির্মাণে সমিতি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।

এনএইচ/এমএইচআর/এমএস