রেমিট্যান্স বাড়াতে আরবি ভাষা শিক্ষা নেওয়ার ওপর জনমত সৃষ্টি করা দরকার। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের দেশের শ্রমিকরা ভাষা না জানার কারণে অনেক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। আগামীতে যাতে আমাদের জনশক্তির অপচয় না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখা দরকার বলে জানিয়েছেন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) চেয়ারম্যান ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ।
Advertisement
শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ কোরআন প্রচার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘মধ্যপ্রাচ্য কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো অপরিহার্য’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া শ্রমিকদের ‘কাইফা হালুকা, আনা বি খায়ের’ শুধু এটুকু আরবি জানলেই হবে না, একজন শ্রমিক যাতে আরবি বুঝতে ও বুঝাতে পারে পাশাপাশি লিখতে পারে সেটা জানা খুবই দরকার। এজন্য দেশ থেকেই আরবি ভাষা শিখিয়ে পড়িয়ে পাঠাতে হবে। যদি তা করা না হয় তাহলে মানবিক মর্যাদা, সামাজিক মর্যাদা এবং আর্থিক মর্যাদায়ও আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে থাকবো।
ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অন্তত লাখ কোটি সার্টিফিকেটধারী লোক সৃষ্টি করেছে। সেই সার্টিফিকেটধারী লোকেরা বিদেশ হয়তো গিয়েছে বা যায়নি। যদি না যায়, তাহলে কেন যায়নি। অর্থাৎ আমাদের এখানে বড় একটা শুভঙ্করের ফাঁকি বা অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা কাজ করেছে বলেই আজ রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে এই দুর্গতি। অথচ এরাই আমাদের মানবসম্পদ।
Advertisement
তিনি বলেন, আমাদের কর্মীরা মধ্যপ্রাচ্যে অধস্তনের অধস্তন হিসেবে কাজ করে। সবচেয়ে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে পাকিস্তানি ও শ্রীলঙ্কান বা অন্যরা হচ্ছে বাংলাদেশিদের বস। এটার অন্যতম কারণ ভাষা না জানা। তারা ভাষা জানার কারণে মালিকদের কাছাকাছি যেতে পারলেও আমরা যেতে পারি না, তাদের বুঝাতেও পারি না। যেকারণে চাইলেও মধ্যপ্রাচ্যে আমাদরে শ্রমিকরা বড় কোনো পদে যেতে পারেন না।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত তিনটি ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেগুলো হলো- রেমিট্যান্স, গার্মেন্টস ও গ্রামীণ উন্নয়ন।
প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্সযোদ্ধা। সত্যিকার অর্থে তারাই আসল যোদ্ধা। আমরা জাতিগতভাবে স্বাধীনতা লাভ করেছি। তবে অর্থনৈতিকভাবে এখনো স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। এজন্য বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ অন্যদের কাছে কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে।
বাংলাদেশ কোরআন প্রচার ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা মো. তামজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ই্নস্টিটিউটিট (নিপোর্ট), সাবেক ইকোনমিক কাউন্সিল ও মিনিস্টার, বাংলাদেশ দূতাবাস সৌদি আরব ড. মো. আবুল হাসান। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্দ শহীদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগে চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং স্বতন্ত্র পরিচালক নূরুল ইসলাম খলিফা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক আব্দুল আউয়াল সরকার।
Advertisement
ইএআর/এমএএইচ/