অবশেষে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছ থেকে দলিল করা ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা মূল্যের আট একর জমির মালিকানা অস্বীকার করলেন সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার রেখা।
Advertisement
পহেলা অক্টোবর ঢাকার একটি নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এক হলফনামায় এ জমির মালিকানা তিনি অস্বীকার করেন। হলফনামায় তিনি দাবি করেছেন, ‘রেজিস্ট্রিকৃত ওই সাফ কবলা দলিল আমি ও আমার নিকটজনের অজান্তে কে বা কারা সম্পন্ন করেছে যা আমি অবগত নই। আমি বিষয়টি অবগত হয়ে আমার প্রতিনিধির মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত জেনে দলিলের কপি সংগ্রহ করি।’
হলফনামায় তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘আমি বা আমরা অবগত না থাকায় অত্র দলিলে আমি বা আমার নিকটজনের কোনোরূপ স্বত্ব বা মালিকানা থাকবে না। ভবিষ্যতেও দাবি করবো না। এ নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো অসুবিধা বা বিতর্ক, বিবাদ দেখা দিলে আমি বা আমার নিকটজন দায়-দায়িত্ব বহন করবো না।’
এমনকি দলিলটির মূল্য ও রেজিস্ট্রি খরচ তিনি পরিশোধ করেননি বলে উল্লেখ করেছেন। এই হলফনামাটি অতি সম্প্রতি কলাপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দাখিল করা হয়েছে। এনিয়ে এখন মানুষের মাঝে চলছে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা সমালোনা।
Advertisement
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর এই জমি ফাতেমা আক্তারের নামে খেপুপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ৪৫১২ নম্বর দলিলের মাধ্যমে ক্রয় দেখানো হয়েছে। তাপস সাহা গং এই জমির বিক্রেতা। কলাপাড়া উপজেলা সদরের পৌরসভা লাগোয়া ইটবাড়িয়া মৌজার জেএল নং-০৮, ১৭৩/১ নং খতিয়ানে এই জমির অবস্থান দেখানো রয়েছে।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন- ২০১৯ সালের সম্পাদিত দলিল নিয়ে এখন কেন অস্বীকার করলেন তিনি। আর কোটি টাকার সম্পত্তির দলিল সম্পাদনের জন্য রেজিস্ট্রি খরচ বাবদ স্ট্যাম্প ২ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০ টাকা, ফি এক লাখ ৯৯ হাজার ৮২০ টাকা, ডিসি ও ইউপি কর বাবদ ২ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪০ টাকা, উৎস্য কর বাবদ ৯৯ হাজার ৭৮০ টাকা, মোট ৮ লাখ ৯৮ হাজার ১৮০ টাকা কে খরচ করলো?
পটুয়াখালী-৪ আসনের (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অন্তত একক ও যৌথভাবে ২৭টি দলিলের মাধ্যমে বিভিন্ন মৌজায় অন্তত ৩৫ একর জমি ক্রয় করেছেন। এর মধ্যে আবার ঘোষণাপত্র দলিলের মাধ্যমেও কুয়াকাটায় ৮০ শতক জমির গ্রহীতা হয়েছেন। একইভাবে আমমোক্তার নামার মাধ্যমেও কিছু জমির মালিক হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ফাতেমা আক্তারকে একাধিকবার মোবাইলে কল করেও কথা বলা যায়নি। ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
Advertisement
কলাপাড়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম জানান, তিনি ফাতেমা আক্তারের হলফনামাটি পেয়েছেন।
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এফএ/এএসএম