আইন-আদালত

খালেদা জিয়ার নাশকতার ১০ মামলা বাতিল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও নাশকতার অভিযোগে করা ১১ মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি ও নাশকতার অভিযোগে ১০টি মামলা রয়েছে।

Advertisement

বুধবার (৩০ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

আদালতে এ সময় সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, এইচ এম সানজীদ সিদ্দিকী, আনিসুর রহমান রায়হান ও মো. মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার।

Advertisement

খালেদা জিয়ার পক্ষে ও আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ১১টি মামলার মধ্যে রাজধানীর দারুস সালাম থানার সাতটি ও যাত্রাবাড়ী থানার তিনটি নাশকতার অভিযোগে এবং আদালতে করা রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা। এসব মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন জামিন ছিলেন।

তারা আরও বলেন, ১১টি মামলার কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন খালেদা জিয়া। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট রুলসহ মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। এই রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হাইকোর্টে বাতিল

রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, শুনানি নিয়ে আদালত ওইসব মামলায় রুল অ্যাবসিলিউট করেছেন। এর অর্থ হলো- মামলাগুলো বাতিল হয়ে গেলো। এই মামলাগুলো আর থাকলো না। একটি ছিল রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। এখানে খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, সরকারে অনুমতি ছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা যায় না। এ মামলা দায়েরে সরকারের কোনো অনুমতি ছিল না। অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও খালেদা জিয়াকে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়। অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। রুল শুনানি শেষে এই মামলার কার্যক্রমও বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। অর্থাৎ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করা এসব মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

Advertisement

দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দি ছিলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল।

এরপর ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।

 

এফএইচ/ইএ/বিএ/এএসএম