ধর্ম

নারীদের জন্য রাতে চুল খুলে ঘুমানো কি নিষিদ্ধ?

আমাদের দেশে অনেক অঞ্চলে মনে করা হয় নারীদের জন্য রাতে চুল খোলা রেখে ঘুমানো নিষিদ্ধ ও ক্ষতিকর। চুল খোলা রেখে ঘুমালে বাবা বা স্বামীর আয় কমে যায়, বিপদ-আপদ আসে ইত্যাদি।

Advertisement

ইসলামে এ রকম ধরাণার কোনো ভিত্তি নেই। এগুলো অহেতুক মনগড়া কুসংস্কার মাত্র। ইসলামে নারীদের রাতে চুল খোলা রেখে ঘুমানোর বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কোরআন ও হাদিসে এমন কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায় না যা চুল খোলা রেখে ঘুমানোকে নিষিদ্ধ, ক্ষতিকর বা অপছন্দনীয় বলে।

নারীরা নিজের পরিবারে মাহরামদের মধ্যে যখন থাকে, তখন যেভাবে খুশি ঘুমাতে পারে। এটি ব্যক্তিগত পছন্দ ও আরামের উপর নির্ভর করে।

চুল খোলা রেখে ঘুমানোর ফলে কেউ যদি শারীরিক অস্বস্তি বোধ করে, জট লেগে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় পড়ে, তাহলে চুল বেঁধে ঘুমাবে।

Advertisement

নারীরা পরপুরুষের সামনে চুল প্রকাশ করতে পারবে?

নারীদের চুল পর্দা ও সতরের অন্তর্ভুক্ত; তাই গায়রে মাহরাম বা পরপুরুষের সামনে চুল প্রকাশিত রেখে যাওয়া যাবে না। কোরআনে পরপুরুষের সামনে নারীদের শারীরিক সৌন্দর্য ঢেকে রাখতে নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা নুর: ৩১)

নামাাজের সময়ও চুল ঢেকে রাখতে হবে

নামাজের সময়ও নারীদের চুল ঢেকে রাখতে হবে। নামাজের সময় নারীদের মুখমণ্ডল, কবজি পর্যন্ত দুই হাত ও টাখনু পর্যন্ত পা ছাড়া পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখা ফরজ যাতে চুলও অন্তর্ভুক্ত।

নামাজে যে অঙ্গগুলো ঢাকা ফরজ সে অঙ্গগুলোর কোনোটির চার ভাগের এক ভাগ বা এর বেশি যদি তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকে, তাহলে নামাজ ভেঙে যাবে। নারীদের সব চুল মিলে এক অঙ্গ গণ্য হয়। তাই নামাজের সময় মাথার সব চুলের এক চতুর্থাংশ পরিমাণ বা তার বেশি যদি তিনবার 'সুবহানা রব্বিয়াল আযীম’ বলা পরিমাণ সময় বের হয়ে থাকে, তাহলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।

ওএফএফ/জিকেএস

Advertisement