চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার বিল জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। এ সংক্রান্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডা. রাব্বিসহ পাঁচজনের সংশ্লিষ্টতা পান। তিনি মামলার সুপারিশও করেন। পরে দায়ের করা মামলায় কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ ছাড়াই তদন্তাধীন অবস্থায় শুধু ডা. রাব্বিকে দায়মুক্তি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে গত এপ্রিলে পদোন্নতি পেয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক হন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে চিকিৎসকদের সংগঠিত করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিগত সরকারের সুবিধাভোগী ওই কর্মকর্তাকে দায়মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় সমালোচনার জন্ম হয়েছে। বর্তমানে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে রয়েছেন।
জাগো নিউজের হাতে আসা সেখ ফজলে রাব্বির অভিযোগ পরিসমাপ্তির বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কোনো বক্তব্য দেননি দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। তবে দুদকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ডা. সেখ ফজলে রাব্বির অভিযোগ পরিসমাপ্তির বিষয়ে মাঠ পর্যায় থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। কমিশনই সরাসরি পাঁচজনের মধ্যে একজনের অভিযোগ পরিসমাপ্তি করেছেন।’
১১ বছর ধরে দুর্নীতির বেড়াজালদুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের (আইসিইউ) আটটি শয্যা, ভেন্টিলেটর ও কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটরসহ প্রায় ১৫ কোটি টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনে চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল। ঠিকাদার যন্ত্রপাতি সরবরাহের পর সেগুলো মানসম্মত না হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে সমালোচনা তৈরি হলে কিছু যন্ত্রপাতি সংযোজন ছাড়াই দীর্ঘদিন হাসপাতালের গোডাউনে ফেলে রাখা হয়। এর মধ্যে আটটি আইসিইউ বেড, আটটি আইসিইউ ভেন্টিলেটর ও একটি কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটর। এসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে ঢাকার পল্লবী থানা এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজ।
Advertisement
পরবর্তীসময়ে এসব যন্ত্রপাতি কেনায় অনিয়ম অনুসন্ধানে দুর্নীতির সত্যতা পায় দুদক। যন্ত্রপাতি কেনায় প্রায় ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই সময়ের সিভিল সার্জন (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী, হাসপাতালের তিন ডাক্তার এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চারজনসহ আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন। ওই মামলায় ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বেশ কয়েকবার কারাবরণও করেন।
এরপর ২০২০ সালের শুরুতে দেশে করোনা মহামারি শুরু হলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালকে ১০০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এসময় সারাদেশে আইসিইউ সংকটের মধ্যে ওই হাসপাতালের গোডাউনে পড়ে থাকা যন্ত্রপাতিগুলো জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। পাশাপাশি ওই সময়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী (বিগত সরকারের শিক্ষামন্ত্রী) এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে সভাপতি করে গঠিত একটি কমিটি ২০২০ সালের ১৯ মে আলোচনার মাধ্যমে এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত দেন। যথারীতি এসব যন্ত্রপাতি জেনারেল হাসপাতালে সংযোজন করা হয়।
আরও পড়ুন সাড়ে ৫ কোটি টাকার বিল জালিয়াতি: ফেঁসে যাচ্ছেন তত্ত্বাবধায়ক সাড়ে ৫ কোটি টাকার বিল জালিয়াতি: মূলহোতাকে বাদ দিয়ে দুদকের মামলা নতুনে গর্জন, পুরোনো অনুসন্ধানে শম্ভুক গতি দুদকেরএ সুযোগে এসব যন্ত্রপাতির বকেয়া থাকা ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিল দাবি করেন ঠিকাদার। ঠিকাদারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিলের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে ‘ব্যয় মঞ্জুরি’ প্রদান করা হয়নি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগ দেন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের দায়িত্বে ছিলেন।
২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিল পরিশোধের জন্য ব্যয় মঞ্জুরিপত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তারপরও মন্ত্রণালয় ব্যয় মঞ্জু্রপিত্র না দিলেও ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যেই ঠিকাদারকে বিল পরিশোধে উদ্যোগী হন ডা. রাব্বি। ২০২২ সালের ২৮ জুন বিলটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিসে উপস্থাপন করা হয়। বিলের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয় একটি ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র। ওই বিলটিতে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে একক স্বাক্ষর করেন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
Advertisement
চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিসে উপস্থাপন করা বিলে যুক্ত ব্যয় মঞ্জুরিপত্রটি ভুয়া দাবি করেন হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মকর্তারা। বিষয়টি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। তবে সরকারি বিলে ডকুমেন্ট জালিয়াতির বিষয়টি দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় ২০২২ সালের ৩০ জুন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ লিখিত অভিযোগ দেন হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক।
ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিলের সঙ্গে যুক্ত ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্রটি যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী ঠিকাদার মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মুন্সি ফারুক হোসেন, তাদের অফিস স্টাফ সাজ্জাদ হোসেন ও মুকিত মণ্ডল এবং হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ফোরকান পরস্পর যোগসাজশে তৈরি করেছেন।
ঘটনায় জড়িত ডা. সেখ ফজলে রাব্বিওব্যয়মঞ্জুরি জালিয়াতির ঘটনা তদন্ত করেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক। অভিযোগ তদন্তে ব্যয়মঞ্জুরিপত্র জালিয়াতির ঘটনায় হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির জড়িত থাকার প্রমাণ পান দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর ফজলে রাব্বিসহ আরও চারজনকে আসামি করে মামলার সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা এনাম।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মুন্সি ফারুক, তার সহোদর সাজ্জাদ মুন্সি, অফিস সহকারী মুকিত মণ্ডল, জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফোরকান ও ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরি তৈরি করে ডা. সেখ ফজলে রাব্বির একক স্বাক্ষরে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার একটি বিল প্রস্তুত করেন। বিলটি অনুস্বাক্ষরবিহীন ছিল। চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিস বিলটি যাচাই-বাছাইকালে ব্যয় মঞ্জুরিপত্রে যে স্মারকটি (স্মারক নম্বর-৪৫.০০.০০০০.১৩৯.১২৯.২০২১/৪৫৯ তারিখ ২৬/০৬/২০২২ খ্রি.) ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং খাতে নিয়োজিত জনবলের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য বরাদ্দ আদেশের স্মারক। স্মারকটি ব্যবহার করে সুশীল কুমার পালের স্বাক্ষর জাল কিংবা স্ক্যানিং করে চিকিৎসা যন্ত্র ব্যয় মঞ্জুরির ভুয়া ও অবৈধ আদেশ দাখিল হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়।
পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ তদন্ত কর্মকর্তারঅভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক এনামুল প্রতিবেদনে মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মুন্সি ফররুখ হোসাইন ওরফে মুন্সি ফারুক, তার ভাই মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন, তাদের অফিস স্টাফ মুকিত মণ্ডল, জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফোরকান এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র তৈরি করে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে দণ্ডবিধির ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯, ৫১১ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর সুপারিশ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা এনামুল হকের প্রতিবেদনটি গত বছরের ২৯ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠান ওই কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাৎ।
মামলার পরিবর্তে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ দুদক পরিচালকেরতদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলার পরিবর্তে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করে প্রতিবেদনটি কমিশনে পাঠান ওই সময়ের দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. সফিকুর রহমান ভুঁইয়া। সুপারিশে তিনি উল্লেখ করেন, ‘যেহেতু আলোচিত বিলটি পাস হয়নি এবং সরকারি টাকা তহবিলে রক্ষিত রয়েছে, সেহেতু মামলা রুজুর পরিবর্তে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এবং হিসাবরক্ষক মো. ফোরকানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা’ এবং ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তিনজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ নেওয়া যেতে পারে।
মামলায় ডা. রাব্বিকে দায়মুক্তি দিয়ে দুদকের চিঠিতদন্ত কর্মকর্তার পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ ও দুদকের পরিচালকের ‘বিভাগীয় ব্যবস্থা’ নেওয়ার সুপারিশকে পাশ কাটিয়ে ডা. রাব্বিকে বাদ দিয়ে অপর চারজনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয় কমিশন। ১১ আগস্ট মামলাটি রেকর্ড হয়। মামলাটি বর্তমানে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ তদন্ত করছে। কিন্তু এরই মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা এবং তদন্ত সংশ্লিষ্ট অফিসের অজ্ঞাতসারে ঘটনার মূলহোতা ডা. সেখ ফজলে রাব্বিকে দায়মুক্তি দিয়েছে দুদক। গত ২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে দেওয়া দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন স্বাক্ষরিত ওই পত্রে (স্মারক: ০০.০১.০০০০.৬৭১.৩১.০৭৭.২৪.৩১৮) অভিযোগ অনুসন্ধান, প্রতিবেদন, মামলার অনুমোদন সংক্রান্ত সূত্র উল্লেখ করে বলা হয়, ‘সেখ ফজলে রাব্বি, তত্ত্বাবধায়ক, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম; পিতা: মৃত সেখ আবুল হোসেন, গ্রাম: প্রাণসায়ের, ডাকঘর: সাতক্ষীরা, উপজেলা: সাতক্ষীরা, জেলা: সাতক্ষীরার বিরুদ্ধে বর্ণিত অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রমাণিত না হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন পরিসমাপ্ত করছে।’
এ বিষয়ে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের বিল নিয়ে দুদকের সেই অভিযোগ থেকে আমাকে দায়মুক্তি দিয়েছে। এরই মধ্যে অভিযোগ পরিসমাপ্তির চিঠিও দিয়েছে দুদক।’ তদন্তাধীন মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের কোনো প্রভাব ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, ‘দুদক অভিযোগ তদন্ত করে যা পেয়েছে, তার ভিত্তিতে আমাকে দায়মুক্তি দিয়েছে। এখানে আমার কোনো প্রভাব ছিল না।’
চট্টগ্রামের প্রতিথযশা মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে কমিশনকে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কমিশন যাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেবেন আদালত শুধু তাদের বিষয়ে অভিযোগ আমলে নিতে পারবেন। আইনের এ দুর্বলতার সুযোগে দুদক যাকে ইচ্ছা মামলা দিচ্ছে, যাকে ইচ্ছা ছেড়ে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ব্যয় মঞ্জুরিপত্র জালিয়াতির ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। দুদকের তদন্ত কর্মকর্তাও অভিযোগের বিষয়ে মামলার সুপারিশ করেছিলেন। আলোচিত বিলটিতে একমাত্র স্বাক্ষরকারী ফজলে রাব্বি। মামলায় প্রাথমিকভাবে আসামি করা না হলেও অভিযোগপত্রে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতার অপব্যবহার দুদদের তপসিলভুক্ত অপরাধ। কমিশন ঘটনার মূল ব্যক্তিকে অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দিয়ে আরেকটি ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করেছেন।’
এমডিআইএইচ/এএসএ/এএসএম