গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়ন এলাকার পটকা এলাকায় বনভূমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে মাওলানা মহিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বনবিভাগের পক্ষ থেকে একাধিক মামলা দিয়েও থামানো যাচ্ছে না এ বনখেকোকে।
Advertisement
তিনি ওই গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের ছেলে এবং পটকা আলিম মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ। তার মেয়ে মাহমুদা পারভীন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) শ্রীপুর উপজেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং একই মাদরাসার প্রভাষক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীপুর রেঞ্জ অফিসের আওতাধীন ৪৫নং পটকা মৌজার সিএস ও এসএ-১৮৫ দাগে বনবিভাগের ৪ একর ৮৯ শতাংশ জমি জবরদখল করেন মহিউদ্দিন। নকল ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কিছু কাগজপত্রও সৃজন করেন তার নামে। গত আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে ওই জমিতে তিনি একটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সংবাদ পেয়ে বনবিভাগ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে তার বিরুদ্ধে মামলা করে। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে।
স্থানীয়রা জানান, মহিউদ্দিন নামজারি জমাভাগসহ জমির জাল কাগজপত্র সৃজন করে বনবিভাগের রেকর্ডিয় সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করেছেন। জমির যৌথ জরিপে দখলদারের তালিকায় মহিউদ্দিন নামে কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই।
শ্রীপুর সদর বিট ও রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন বলেন, পটকা মৌজার সিএস, এসএ রেকর্ড ও বনের গেজেটভুক্ত ভূমিতে মহিউদ্দিন নামে একজন সম্প্রতি বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন এমন সংবাদে শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং মহিউদ্দিনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়ে আসি।
Advertisement
তিনি আরও জানান, এই জমির রেকর্ড নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ জমিতে মহিউদ্দিনের কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ অপরাধ।
এদিকে বনের গেজেটভুক্ত জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজের তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে মহিউদ্দিনের মেয়ে স্বাশিপ নেত্রী মাহমুদা পারভীন, তার ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং ওই জমি তাদের বলে দাবি করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে টিনের উঁচু বেড়া দিয়ে শ্রমিকরা ভেতরে কাজ করছেন। এরইমধ্যে ফাউন্ডেশনসহ ওই বাড়ির প্রথম তলার ছাদ ঢালাই হয়েছে। এ বিষয়ে শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, যেকোনো উপায়ে আমাদের বন রক্ষা করতে হবে। বনের জমিতে বাড়ি নির্মাণের সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, কিন্তু দূর থেকে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এরা খারাপ প্রকৃতির মানুষ, আগেও তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। এখন আবার উচ্ছেদ মামলা করবো। তিনি বন রক্ষায় সাংবাদিকদের পাশে থাকার আহ্বান জানান।
Advertisement
আমিনুল ইসলাম/এফএ/এমএস