অতিবড় মিরাজ ভক্তও মানছেন, টেকনিক্যালি এই টপ ও মিডল অর্ডারের চারজনের ব্যাটিংই মিরাজের চেয়ে বেটার। মুশফিক, লিটন, মুমিনুল এবং শান্ত ব্যাটিংটা বেশি পরিপাটি। সাজানো-গোছানো; কিন্তু তারা জায়গামত পারফর্ম করতে পারছেন না। তাদের চেয়ে স্কিল আর টেকনিকে পিছিয়ে থেকেও মিরাজ ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছেন। রানও করছেন।
Advertisement
এর কারণ কী? টেকনিক্যাল, নাকি মানসিক? টেস্টের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুল এক কথায় এর উত্তর দিতে নারাজ। দেশের সব সময়ের সেরা ব্যাটিং প্রতিভা আশরাফুল মনে করেন, এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বের করতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রেখে পুঙ্খানুপুঙ্খু বিচার বিশ্লেষণ করে, তারপর একটা সিদ্ধান্তে যেতে হবে।
আশরাফুল মনে করেন, ম্যাচ কন্ডিশন ও ব্যাটিং অর্ডার একটা বড় ফ্যাক্টর। যেহেতু শুরু ভাল হচ্ছে না, ওপেনিং জুটি চট জলদি ভেঙ্গে যাচ্ছে, তাই মুমিনুল, শান্ত, মুশফিক ও লিটন দাসকে আগেই ব্যাটিংয়ে নামতে হচ্ছে। সেখানে মিরাজ ৭ বা ৮ নম্বরে ব্যাটিং করছে।
মিরাজ যখন উইকেটে যাচ্ছে, তখন বলের ঔজ্জ্বল্য কমে যাচ্ছে। ২৫-৩০, এমনকি কখনো কখনো ৪০ ওভার পর্যন্ত খেলা হয়ে যাচ্ছে। বল পুরনো হয়ে যাচ্ছে। আর প্রতিপক্ষ বোলারের ফাস্ট স্পেলগুলোও শেষ হয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
তাহলে কি মিরাজের কোনোই কৃতিত্ব নেই? আশরাফুলের জবাব, ‘নাহ! তা কেন হবে? আছে। অবশ্যই কৃতিত্ব আছে। মিরাজ ভাল ব্যাটার, তাই তার প্রস্তুতিটা ভাল থাকছে। ভাগ্যও তার পক্ষে থাকছে। এছাড়া মিরাজের গেম সেন্স ভাল। সেই সেন্সটা জায়গামত অ্যাপ্লাই করে সে পরিবেশ-পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। আর তাই সে ধারাবাহিকভাবে ওই জায়গায় (৭-৮ নম্বরে) খেলতে নেমে রান করছে।’
মিরাজের স্কিল ও টেকনিকের কথা বলতে গিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘শচিন টেন্ডুলকার আর বিরেন্দর শেবাগের মত ব্যাটারেরও ভেতরের দিকে আসা ডেলিভারিতে প্রবলেম ছিল; কিন্তু তারপরও তারা একজন ১৫ হাজার, অন্যজন ১০ হাজার রান করেছেন। কারন, তারা অ্যাডজাস্ট করেই খেলেছেন। কোন উইকেটে, কোন দলের কোন বোলারের বিপক্ষে কোন কৌশল অবলম্বন করলে রান করা যাবে? সেটা খুব ভাল বুঝতেন, জানতেন আর সেগুলো কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগ ঘটাতে পারতেন, শচিন ও শেবাগ। তাই তারা অনেক বেশি সফল। অনেক বড় ব্যাটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সমাদৃত।’ মুশফিক ও শান্তর খারাপ খেলার পিছনে টেকনিক্যাল কারণই বড় বলে মন্তব্য আশরাফুলের। মুশফিক একটু বেশি ওয়াইড ওপেন চেস্টেড হয়ে ব্যাটিং করছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার সময় এতটা ছিল না মনে হয়। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে দাঁড়ানোর সময় সামনের পা’টা বেশি ওপেন করে রাখছে। আউট সাইড অফস্ট্যাম্প বলের লাইনে যাচ্ছে না। সে কারণেই ইনকামিং ডেলিভারিতে সে বোল্ড হচ্ছে, আউট হচ্ছে।’
‘শান্তরও টেকনিক্যাল প্রবলেম আছে। সামনের পা টা ম্যুভ কম করে। ৩২ ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচে একটি মাত্র ফিফটি। ইনকামিং ডেলিভারিতে প্রবলেম বেশি হচ্ছে শান্তর।’
এআরবি/আইএইচএস
Advertisement