খেলাধুলা

‘মিরপুর টেস্টে একাদশ সাজানোয়ও চরম ভুল ছিল’

মিরপুর টেস্ট শেষে মেহেদি হাসান মিরাজ অকপটে স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্ট উইকেট চিনতে বা উইকেটের চরিত্র বুঝতে ভুল করেছে। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলও মনে করেন, শুধু উইকেটের চরিত্র বুঝতেই নয়, একাদশ সাজানোয়ও চরম ভুল ছিল।

Advertisement

শনিবার জাগো নিউজের সাথে আলাপে আশরাফুল বলেন,‘গেম প্ল্যানিংয়েও ছিল বড় ভুল।’

আশরাফুল বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, একাদশ সাজানোয় ভুলের কারণে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসটাও বেশি ছোট হয়েছে এবং শান্তর দল ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছে।

আশরাফুলের সোজা কথা, ‘একই স্টাইলের দুজন অফস্পিনার মিরাজের সাথে নাইম হাসানকে খেলানোর কোনোই দরকার ছিল না।’

Advertisement

তিনি মনে করেন, একজন পেসার না খেলিয়ে অন্তত দু’জন দ্রুত গতির বোলার খেলানো উচিৎ ছিল। তার ব্যাখ্যা, ‘আগে আমাদের হাতে পেস বোলার ছিল না। এখন আমাদের হাতে ৭/৮ জন পেস বোলার আছে, যারা ১৪০ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে।’

শেরে বাংলার যে পিচে বাংলাদেশ আর দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা হয়েছে, সেটার আচরণ খানিকটা বিভ্রান্তকর ছিল। ব্যাটারদের পরিষ্কার ও স্বচ্ছ ধারনা নিয়ে খেলা কঠিন ছিল। তাই আশরাফুলের মনে করেন, ‘এবার ডজি উইকেটে খেলা হয়েছে, সেখানে অন্তত আরও একজন দ্রুত গতির বোলার দরকার ছিল। এই ধরনের বিভ্রান্তমূলক পিচে ১৪৫ কিলেমিটার গতির বোলার খেলা ভেরি টাফ। এখানে একটা বল ওপরে আসবে। আর একটা বল নিচে থাকবে। তাসকিন আর শরিফুলের মত বোলার ছিল। তাদের বাইরে রেখে সাজানো হয়েছে দল। যারাই প্ল্যান করেছে, তারাই খুব রং ডিসিশন নিয়েছে।’

আশরাফুল আরও একটি বিষয় তুলে ধরেছেন। তার উপলব্ধি, শুধু একাদশে একজন পেসার কম ছিল তা নয়। ওপেনিং জুটিটাও ঠিক হয়নি। তিনি মনে করেন, মাহমুদুল হাসান জয়কে নেয়া ঠিক থাকলেও সাদমানের বদলে শেরে বাংলায় জাকির হাসানকে ওপেনার হিসেবে খেলানো উচিৎ ছিল এবং জাকির খেললে অন্তত একপ্রান্তে কেউ একজন হাত খুলে রান করতে পারতেন - এমন ধারনা পোষণ করে আশরাফুল বলেন,‘আমাদের প্রথম ইনিংসের রানটা ১০৬ এর জায়গায় ২০৬ হলেও খেলার চালচিত্র ভিন্ন হতে পারতো। আমরা জানি, আমিই বুঝতেছিলাম এই পিচে আমাদের একদিন পুরো খেলা টাফ। এমনকি আমরা যে সেকেন্ড ইনিংসে ভাল খেলে ৩০০ প্লাস রান করেছি, তাও কিন্তু পুরো ৯০ ওভার খেলতে পারিনি। ৮৮ ওভারে অলআউট।’

‘কাজেই আমাদের অন্তত এক এন্ড থেকে বা দু’একজনকে চালিয়ে খেলা উচিৎ ছিল। তাহলে প্রথম ইনিংসে অন্তত ১০০ রান বেশি হতো। সে ক্ষেত্রে আমাদের মনে হয়, সাদমানকে ড্রপ করে জাকির হাসানকে খেলানো উচিৎ ছিল। সাদমান, জয় ও জাকিরের মধ্যে জাকির তুলনামূলক হাত খুলে খেলতে পারে। দ্রুত রান তুলতে পারে। শটস খেলার পারদর্শিতাও বেশি। চারদিকে মেরে খেলতে পারে; কিন্তু সে শেষ ৪ ইনিংস রান করেনি বলে আমরা তাকে ড্রপ দিলাম। সাদমান একটি পঞ্চাশ হাঁকিয়েছে বলে আমরা তাকে খেলিয়েছি। কন্ডিশন ও ম্যাচের পরিস্থিতি কাকে ডিমান্ড করে, তা না বুঝে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। জাকিরকে ড্রপ দিয়ে জয়কে খেলালাম। গেম প্ল্যান ডিফারেন্ট। এই বিষয় গুলো মিসিং। আমার মনে হয় আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কি বললো? কে কি লিখলো- এসব চিন্তা করি বেশি। পাবলিক যে যাই বলুক টিম ম্যানেজমেন্টের তো একটা প্ল্যান থাকতে হবে। কে এই কন্ডিশনে বেশি কার্যকর হবে? সেটা আমাদেরই ঠিক করতে হবে। কাকে খেলালে আমরা উপকৃত হবো। এ পিচে কে দ্রুত কিছু রান করে দিলে আমাদের লাভ হবে, তা চিন্তা করা উচিৎ ছিল।’

Advertisement

এআরবি/আইএইচএস