ধর্ম

নতুন রূপে ইসলামি বইমেলা; অংশ নিয়েছে ৮৫টি প্রকাশনী

ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ও পূর্ব চত্বরে চলছে ইসলামি বইমেলা। ‌ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত।

Advertisement

প্রতি বছরই ঈদে মিলাদুন্নবি উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম চত্বরে ইসলামি বইমেলা হয়। তবে এর আগে বেশ কয়েক বছর অনুষ্ঠিত বইমেলায় মূলধারার ইসলামি প্রকাশনীগুলো জায়গা পেত না বরং মেলার নামে হকাররাই দাপটের সাথে ব্যবসা করতো বলে অভিযোগ অনেকের।

৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন সরকার যে এ অভিযোগ আমলে নিয়ে একটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছে এবারের ইসলামি বইমেলার পরিসর ও রূপে তা স্পষ্ট।

প্রতি বছর বাইতুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে মেলার আয়োজন করা হলেও এবার প্রকাশকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব গেটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মূল মেলা। যদিও দক্ষিণ গেটেও হকারদের বইয়ের দোকান থাকবে। এবারের মেলায় মূলধারার প্রায় ৮৫টি ইসলামি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে, থাকছে প্রায় ১৫১টি স্টল, যা প্রতি বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

Advertisement

এবারের ইসলামি বইমেলার রূপেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মেলায় অংশগ্রহণকারী মূলধারার ইসলামি প্রকাশকরা এবার তাদের স্টলগুলো আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে সাজসজ্জায় যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। মেলাকে উৎসবমুখর করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। থাকছে লেখক কর্নার, শিশু কর্নার, নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, ঘোষণা মঞ্চ, তথ্যকেন্দ্রসহ নানা আয়োজন। এছাড়া সিরাত, ফিলিস্তিন, জুলাই অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা এবং জ্ঞানভিত্তিক কর্মশালার আয়োজনও থাকছে।

মেলায় অংশগ্রহণকারী জনপ্রিয় একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল যে ইসলামি বইমেলায় প্রকৃত ইসলামি প্রকাশনীগুলো জায়গা পাক এবং এর পরিসর বৃদ্ধি পাক। গত চার-পাঁচ বছর ধরে আমরা বারবার ইসলামি ফাউন্ডেশনে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ৫ আগস্টের পর আমরা আবার ইসলামি ফাউন্ডেশনের কর্তাব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করেছি, আলোচনা করেছি। এবার মেলার পরিসর বাড়ানো হয়েছে এবং মেলাটি নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে। একটা আদর্শ বইমেলা যেমন হয়, সেভাবেই মেলা সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

ইসলামি বইমেলায় গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদুল হাসান

তবে এই পরিসরও যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা হলো, ইসলামি ফাউন্ডেশন আগামী বছর থেকে আরও বড় পরিসরে একটি আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলার আয়োজন করবে। দেশীয় ইসলামি প্রকাশনীগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ইসলামি প্রকাশনীগুলোও মেলায় অংশগ্রহণ করবে। এটা নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা আলোচনা শুরু করেছি।

Advertisement

এবারের বইমেলায় অংশ নেওয়া উল্লেখযোগ্য প্রকাশনীগুলো হলো, মাকতাবাতুল ফুরকান, কানন, সীরাত পাবলিকেশন, বুকমার্ক পাবলিকেশন, কালান্তর প্রকাশনী, হুদহুদ প্রকাশন, প্রত্যাশা প্রকাশন, মাকতাবাতুল খিদমাহ, পুনরায় প্রকাশন, আরিশ প্রকাশন, মক্তব প্রকাশন, তারুণ্য প্রকাশন, রাইয়ান প্রকাশন, বইঘর, ইলহাম, আহসান, মক্কা, নাশাত পাবলিকেশন, প্রচ্ছদ প্রকাশন, মাকতাবাতুল হুদা, মাকতাবাতুল আশরাফ, মাকতাবাতুল আযহার, গার্ডিয়ান পাবলিকেশন, মিরর পাবলিকেশন, পথিক প্রকাশন, সাবিল পাবলিকেশন, প্রয়াস প্রকাশন, মুহাম্মদ পাবলিকেশন, ইসলামিয়া কুতুবখানা, পেনফিল্ড পাবলিকেশন, দাওয়া পাবলিকেশন, মাদানী কুতুবখানা, সত্যায়ন প্রকাশন, ইলমহাউস পাবলিকেশন, মাকতাবাতুল বায়ান, ইসলাম হাউস, দারুল ইলম, রাহনুমা প্রকাশনী, রংধনু পাবলিকেশন, রুহামা পাবলিকেশন, মাকতাবাতুত ত্বহা, মাকতাবাতুল হেরা, আলোকিত প্রকাশনী, নবপ্রকাশ, সোজলার পাবলিকেশন, শিশুকানন, ফিউচার উম্মাহ, ফাউন্টেন পাবলিকেশন, ইলান নুর, বইপল্লী, তালবিয়া, মাকতাবাতুল হাসান, স্বরবর্ণ প্রকাশন, সন্দীপন প্রকাশন, আতফাল, হসন্ত প্রকাশন, আইসিএস, ওয়াফি পাবলিকেশন, ফুলদানী, দারুল আরকাম, ওয়াহিদিয়া, উমেদ প্রকাশ, আর রিহাব পাবলিকেশন, পড় প্রকাশ, সাবাহ পাবলিকেশন, হাসানাহ পাবলিকেশন, মাকতাবাতুস সালাফ, সিয়ান পাবলিকেশন, টুনটুন বুকস, মাকতাবাতুন নূর, আশরাফিয়া বুক হাউস, ইত্তিহাদ পাবলিকেশন, সমকালীন প্রকাশন, লিটল উম্মাহ, চেতনা প্রকাশন, ইসলামিক ল রিসার্চ, মাকতাবাতুল আসলাফ ইত্যাদি।

আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। ছুটির দিনে বইমেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

ওএফএফ/জেআইএম