দেশজুড়ে

প্রায় তিনমাস বন্ধ স্পিডবোট সেবা, দুর্ভোগে যাত্রী চালকরা

পাবনার কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোট সেবা প্রায় তিনমাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। পাশাপাশি কাজ না থাকায় সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে স্পিডবোট চালক ও এ সংশ্লিষ্টদের।

Advertisement

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্য মতে, ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে কাজীরহাট-আরিচা নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরির পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচল শুরু হয় ২০১৬ সালে। ১৩ কিলোমিটার দূরত্বের এ নৌপথে চারটি ফেরি ও ৯টি লঞ্চ চলাচল করে। এর সঙ্গে ১২ ও ১৮ সিটের প্রায় একশ স্পিডবোট চলতো। এতে এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের পানিপথ পাড়ি দেওয়া যেত ১৫-২০ মিনিটে। ফলে প্রতিদিন হাজারেরও অধিক মানুষ যাতায়াত করতো স্পিডবোটে। কিন্তু প্রায় দীর্ঘ তিন মাস ধরে এ সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের।

কাজীরহাট ঘাট এলাকা সরেজমিনে দেখা যায়, ইঞ্জিনবিহীন স্পিডবোটগুলো যমুনার চর ও নদীর নালায় ফেলে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো বোটের রং নষ্ট হয়ে উঠে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে অন্যান্য যন্ত্রাংশ।

ঘাটের নিয়মিত যাত্রী ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, মানিকগঞ্জে চাকরি করি। সময় বাঁচাতে কুইক সার্ভিস বা স্পিডবোট ব্যবহার করি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সার্ভিস বন্ধ থাকায় অসুবিধায় পড়েছি। বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের।

Advertisement

ঘাটের চায়ের দোকানদার আব্দুল বাতেন জানান, স্পিডবোট বন্ধ হওয়ায় এ পথে যাত্রী সমাগম অনেকটাই কমেছে। অল্প কিছু যাত্রী আসেন, তারা লঞ্চ দিয়ে পার হন। ফলে বেচা বিক্রি কমেছে। যখন স্পিডবোট চলতো তখন দিনে ৫/৭ হাজার টাকা বিক্রি হতো। আর এখন বিক্রি হচ্ছে পাঁচশ থেকে সর্বোচ্চ হাজার টাকা।

স্পিডবোট চালক বাপ্পী বলেন, এ ঘাটে ৫০/৬০ চালক রয়েছে। বোট চলাচল বন্ধ থাকায় আমাদের উপার্জন পুরোপুরি বন্ধ। জিনিসপত্রের যে দাম, নিয়মিত কাজ করেই সংসার চালানো কঠিন। সেখানে তিনমাস বসে থাকায় খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছি।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রইচ উদ্দিন বলেন, এতোদিন বোটগুলো আওয়ামী লীগ নেতারা নিয়ন্ত্রণ করতো। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, মানসম্পন্ন যাত্রীসেবা নিশ্চিত না করাসহ নানা অভিযোগ ছিলো তাদের বিরুদ্ধে। এর বাইরেও তারা নিজ নিজ এলাকায় ব্যাপক কুকর্ম করেছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর তারাও আত্মগোপনে রয়েছে। ফলে বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে এগুলোর রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে বলে জেনেছি। এখন কর্তৃপক্ষের উচিত নতুন করে রুট পারমিট দিয়ে দ্রুত চালু করা। রুট পারমিট বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

স্পিডবোট চালুর ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ এর নগরবাড়ি-কাজীরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল জানান, স্পিডবোট বন্ধ হওয়ার পর মালিকপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। ফলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে। আগ্রহী স্থানীয় অন্যান্য স্পিডবোট মালিকদের নতুন করে আবেদনের জন্য চিঠি দেওয়া হবে। কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে দ্রুতই স্পিডবোট চালু করা হবে।

Advertisement

এএইচ/এএসএম