মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের পাবই গ্রামের নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন আব্দুল করিম মিন্টু। চাকরি করতেন পুলিশের কনস্টেবল পদে। করোনাকালীন সময় বাহিনীর শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বরখাস্ত হন তিনি। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ভোল পাল্টে নিজেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে পরিচয় দেন। আর এজন্য তার চাকরি চলে যায় বলেও প্রচার করতে থাকেন। এখন আবার পুলিশে চাকরি পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তিনি।
Advertisement
অনুসন্ধানে জানা যায়, আব্দুল করিম মিন্টু এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত অবস্থায় পুলিশ বাহিনী থেকে বরখাস্ত হন তিনি। চাকরি চলে যাওয়ার পর আবারো আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হন। দায়িত্ব পালন করেন কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতির। তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়মিত বিভিন্ন মিটিংয়ে অংশ নিতেন। প্রায় সময় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে দেখাও যেত।
সদ্য সাবেক মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের সঙ্গে তার একাধিক ছবি রয়েছে। এগুলো দিয়ে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন, প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আদায়সহ অভিযোগের শেষ নেই তার বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবই গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, ৫ আগস্টের পর মিন্টু ভোল পাল্টাতে থাকেন। চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য সরব হয়ে ওঠেন। তিনি পুলিশ বাহিনীতে নিজের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে বরখাস্তের বিষয়টি লুকিয়ে নিজের বিএনপি পরিচয় থাকার কারণে চাকরি চলে গেছে বলে দাবি করেন।
Advertisement
হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির ৭ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল মিয়া বলেন, মিন্টু আওয়ামী লীগের জাদরেল নেতা। সে ফ্যাসিবাদের দোসর। ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন ছাত্রদের হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সে। এখন নিজেকে বিএনপি পরিচয় দিয়ে চাকরি এবং ফায়দা নিতে চাচ্ছে।
একই ওয়ার্ডের রজনপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার বলেন, মানুষকে সে যেভাবে পেরেছে হয়রানি করেছে। আমার ছেলের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে কত কিছু করেছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেছে সমাধান না করলে অবস্থা খারাপ হবে। সে মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে টাকাও নিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর এখন সে ভোল পাল্টাতে শুরু করেছে। ৫ আগস্ট সরকারের পরিবর্তন না হলে সে কি যে করতো তা বলা বাহুল্য। মিন্টুর মতো লোক যাতে কোনো অবস্থায় পূর্বের পেশায় না যায় সেটা বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে আব্দুল করিম মিন্টু বলেন, আমি পুলিশের চাকরিতে জয়েন করি ২০১৩ সালে। ২০২১ সালে ফেসবুকে আইজিপির বরাত দিয়ে একটি পোস্ট কপি করে শেয়ার করি। এরপর আমি চাকরি থেকে বরখাস্ত হই। এখন আবার নতুন করে চাকরি ফিরে পেতে আবেদন করেছি।
Advertisement
তিনি বলেন, আমার কাছে কিছু লোক টাকা পাবে এটা ঠিক। আমি সবার টাকা দিয়ে দেবো। এগুলো সমাধান করে ফেলবো। তবে আমি কখনো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।
ওমর ফারুক নাঈম/এফএ/এমএস