আহলে কিতাবের অনুসারীদের মধ্যে ইয়াহুদি-খ্রিস্টান এবং মুশরিকরা আল্লাহ তাআলার সন্তান ধারণের বিষয়কে সমর্থন করে আসছিল। আল্লাহ তাআলা তাদের কথাকে অগ্রাহ্য করে তাঁর কোনো সন্তান নেই, সবই তাঁর সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য সন্তান সাব্যস্তের দাবির বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন-এবং তারা বলে যে, আল্লাহ তাআলা সন্তান-সন্ততি গ্রহণ করেন অথচ আল্লাহ তাআলা সব কিছু থেকে পবিত্র; বরং আসমান-জমিনে যা কিছু আছে সবই তাঁর, সবকিছু তাঁরই একান্ত অনুগত। আসমান এবং জমিনের নব স্রষ্টা তিনিই। যখন তিনি কোনো কাজ করতে ইচ্ছা করেন, তখন শুধু বলেন, ‘হও’, ফলে তা হয়ে যায়। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১১৬-১১৭)এ আয়াতে খ্রিস্টানদের অযৌক্তিক দাবিকে ভিত্তিহীন এবং ইয়াহুদি ও মুশরিকদের কথার প্রতিবাদ করা হয়েছে। কারণ খ্রিস্টানদের সঙ্গে সঙ্গে তারাও ভ্রান্ত মত পোষণ করে বলত যে, আল্লাহ তাআলার সন্তান-সন্ততি রয়েছে।বরং ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানসহ মুশরিকদের জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে যে, আসমান-জমিনের মালিক আল্লাহ, এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সকল কিছুর সৃষ্টিকারী, আহার দাতা, নিয়ন্ত্রণকারী, পরিবর্তনকারী সবই আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। তবে কেন তাঁর সৃষ্ট বস্তু তার সন্তান হতে যাবে?তাই আল্লাহ তাআলা সুরা ইখলাছ নাজিল করে বলেন, ‘হে রাসুল! আপনি বলুন, আল্লাহ তাআলা এক। আল্লাহ তাআলা কারো মুখাপেক্ষী নন। তাঁর কোনো সন্তান-সন্ততি নেই, আর তিনিও কারো সন্তান নন। আর তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।এ ব্যাপারে হাদিসে কুদসিতে এসেছে- ‘আদম সন্তান আমাকে মিথ্যাজ্ঞান করে, অথচ তার জন্যে আদৌ উচিত নয় যে, সে আমাকে গালি দিবে। আর তা কোনো অবস্থাতেই সমীচিন নয়। মিথ্যাজ্ঞান করার মর্মার্থ হলো- সে মনে করে তাঁর মৃত্যুর পর আমি তাকে পুনরায় জীবিত করতে পারবো না। আর গালি দেয়ার অর্থ সে আমার সন্তানের কথা বলে অথচ আমি এ সব কিছু থেকে পবিত্র, মহান। (এমনকি) স্ত্রী-পুত্র পরিবারের সম্পর্ক থেকে বহু উর্ধ্বে।পরিশেষে...আমরা সেই মহান সত্ত্বার ইবাদাত-বন্দেগি করি এবং করবো, যিনি সমগ্র সৃষ্টির স্রষ্টা। যিনি ‘হও’ বললেই তাঁর মর্জি মতো সৃষ্টির উৎপত্তি হয়।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর বড়ত্ব ও মহান ক্ষমতার প্রতি চূড়ান্ত বিশ্বাস করার পাশাপাশি শিরক মুক্ত ঈমানের অধিকারী হওয়ার এবং শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি
Advertisement