ধর্ম

খাঁচায় পাখি পোষা কি জায়েজ?

উত্তমভাবে জীবন ধারণের উপযোগী খাবার-পানীয় ও পরিবেশের ব্যবস্থা করতে পারলে এবং কোনো কষ্ট না দিলে খাঁচায় রেখে পাখি পোষা জায়েজ। কোনো কোনো সাহাবি খাঁচায় রেখে পাখি পুষতের বলে বর্ণিত রয়েছে। হজরত হিশাম ইবনে উরওয়া (রা.) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.) মক্কায় ছিলেন। তখন সাহাবিরা খাঁচায় পাখি রাখতেন। (আল আদাবুল মুফরাদ: ৩৮৩)

Advertisement

আনাস (রা.) বলেন, আমার এক ভাই ছিল; তার নাম ছিল আবু উমায়ের। যখনই সে নবিজির (সা.) কাছে আসতো, তিনি বলতেন, হে আবু উমায়ের! তোমার নুগায়ের কী করছে? (একটি পাখির নাম) সে নুগায়েরকে নিয়ে খেলত। তিনি আমাদের ঘরে নামাজের জন্য দাঁড়াতেন এবং আমরাও তার পেছনে দাঁড়াতাম। আর তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করতেন। (সহিহ বুখারি: ৬১২৯)

এ সব হাদিস থেকে বোঝা যায় যথাযথ পরিচর্যা করতে পারলে পাখি পোষা নিষিদ্ধ নয়। তবে যথাযথ পরিচর্যা না করতে পারলে খাঁচায় পাখি আটকে রাখা যাবে না, ছেড়ে দিতে হবে। পশুপাখি আটকে রেখে সঠিকভাবে খাবার-পানীয়ের ব্যবস্থা না করা অত্যন্ত নিকৃষ্ট কাজ। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, এক নারীকে একটি বেড়ালের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে বেড়ালটি মারা গিয়েছিল, পরিণতিতে ওই নারী তার কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। সে যখন তাকে বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও দিত না যে, সে কীট-পতঙ্গ ধরে খাবে। (সহিহ বুখারি: ২৩৬৫)

আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে সব পশুপাখির প্রতি দয়া করা, খাবার খাওয়ানো, তাদের কষ্ট দূর করা, কোনো বিপদে পড়লে উদ্ধার করা সওয়াবের কাজ। পশুপাখিকে অহেতুক কষ্ট দেওয়া, হত্যা করা গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে বনি ইসরাইলের এক ব্যাভিচারী নারী কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে আল্লাহর ক্ষমা লাভ করেছিলো। রাসুল (সা.) বলেন, একবার এক তৃষ্ণার্ত কুকুর কূপের পাশে ঘোরাঘুরি করছিল। তৃষ্ণায় তার প্রাণ বের হওয়ার উপক্রম হয়। বনি ইসরাইলের এক ব্যভিচারী নারী তা দেখতে পেয়ে নিজের পায়ের মোজা খুলে মোজায় পানি ভরে কুকুরটিকে পানি পান করায়। এ কারণে তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৩৪৬৭)

Advertisement

অপ্রয়োজনে পশুপাখিকে হত্যা করতে নিষেধ করে রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি চড়ুই অথবা তা থেকে ছােট কোনো জন্তু অন্যায়ভাবে (খাওয়ার প্রয়োজন বা ক্ষতির আশংকা ছাড়া) হত্যা করে, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করবেন। (সুনানে নাসাঈ: ৪৩৫০)

ওএফএফ/এমএস