নিয়ন্ত্রক সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ, অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন ও অনিয়মিত কর্মীদের নিয়মিতকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন থেকেই আন্দোলন করে আসছিল সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
Advertisement
তবে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধে সকল প্রকার আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে গেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও আরইবি কর্তৃক সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একের পর এক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ তাদের।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বৈষম্যহীন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে কোন আন্দোলন চলমান না থাকা সত্ত্বেও আরইবি প্রায় প্রতিদিনই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিহিংসামূলক স্ট্যান্ডরিলিজ, বদলি ও সংযুক্তি করছে। যা সমিতিগুলোতে নতুন করে অসন্তোষ তৈরি করছে। বিষয়টিকে আরইবির উসকানিমূলক চেষ্টা বলে মনে করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
Advertisement
আরও বলা হয়, ২৪ অক্টোবর ৭ জনকে স্ট্যান্ডরিলিজপূর্বক সংযুক্ত করা হয় এবং গতরাতে এক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহেই সর্বমোট ৬৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামাসহ ১৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে কারণে সারাদেশে সবগুলো সমিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভেতরে ভেতরে সবাইকে সংক্ষুদ্ধ করে তুলছে।
বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, উন্নত গ্রাহক সেবা ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে আরইবি ও পবিস সংস্কার সময়ের দাবি। ইতোপূর্বে সরকারের পক্ষ থেকে দাবির যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে কমিটি গঠন ও একাধিক মিটিংও হয়েছে। বর্তমানেও সেসব কমিটি দাবির বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করছে। এমনকি গতকালকে দেশের বিজ্ঞ, প্রথিতযশা ও খ্যাতনামা জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে আরেকটি কমিটি গঠন করেছে। কয়েকদিন আগে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) একটি কমিটি করেছে। বর্তমানে কমিটিগুলো কাজ করছে। সরকারের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট হয়ে আমরাও কোন প্রকার আন্দোলন থেকে বিরত থেকে সর্বোচ্চ গ্রাহক সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছি।
কিন্তু অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) অব্যাহতভাবে দমনমূলক আচরণ করেই যাচ্ছে। কোন কারণ ছাড়াই বিভিন্ন সমিতিতে গণহারে বদলি স্ট্যান্ডরিলিজ করে যাচ্ছে। এর আগে চাকরি থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ২৪ কর্মকর্তাকে। বর্তমানে অনেকে কর্মকর্তাই নিয়মিত অফিস করতে পারছেন না। তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। কোন প্রকার কর্মসূচি ছাড়াই আরইবির এ রকম বিমাতাসুলভ আচরণ সন্দেহজনক। তারা পরিকল্পিতভাবে দেশের বিদ্যুৎ সেক্টরকে উস্কে দিয়ে অস্থিশীল করে তুলতে চাইছে।
এমতাবস্থায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিতরণে দেশের সবচেয়ে বড় সংস্থা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং হয়রানি বন্ধে সরকার, দেশবাসী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়া কর্মীদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
Advertisement
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আরইবি পবিস সংস্কারে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের যে কমিটি করে দিয়েছে সরকার তার মাধ্যমেই একটা টেকসই সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চলমান সংকট নিরসনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য সমাধানে প্রয়োজনে সকল প্রকার সহযোগিতা করতে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সতর্কতা ও ধৈর্যের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং গ্রাহক সেবা চালু রাখার অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি আরইবির কোন ধরনের উসকানিতে না জড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
এনএস/জেএইচ