আমদানি স্বাভাবিক থাকার পরও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ স্থানীয় সব খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। এসব বাজারে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় মরিচ বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি বাড়লেও আড়তে তেমন কমেনি কাঁচামরিচের দাম। গত দুর্গাপূজায় টানা পাঁচদিন বন্দর বন্ধ এবং দেশে বন্যা পুঁজি করে কাঁচামাল গুদামজাত করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন আড়তদাররা।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেনাপোল ও শার্শার একাধিক বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্গাপূজার আগে এসব বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচামরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি। পূজার ছুটির মধ্যে তা বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। সেই ধারাবাহিকতায় এখনো ২৫০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।
অথচ বেনাপোল বন্দর দিয়ে মরিচ আমদানি বেড়েছে কয়েকগুণ। ১৪-২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৯ দিনে ১২২টি ট্রাকে এক হাজার ৪২১ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে। কেনা থেকে শুরু করে শুল্ককর মিলিয়ে আমদানি করা এসব মরিচের কেজিপ্রতি খরচ পড়েছে ৯৬-১০০ টাকা। অথচ বৃহস্পতিবার যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ২৫০-২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আমদানি করা ভারতীয় কাঁচামরিচ।
Advertisement
বেনাপোল বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে আসা আসানুর রহমান বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুতে মরিচ কিনেছিলাম ৯০ টাকা কেজি। আজ দেখছি ২৫০ থেকে টাকা কেজি। এভাবে চললে আমরা চলবো কী করে?’
কাঁচামরিচ কিনতে আসা এমাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকার বাসিন্দা। শুনছি এবং দেখছি এই বন্দরে প্রচুর কাঁচামরিচ আমদানি হচ্ছে। সেই হিসেবে তো ১০০ টাকার নিচে দাম হওয়া দরকার। অথচ এখনো আমাদের প্রায় ৩০০ টাকা কেজি দরে মরিচ কিনে খেতে হচ্ছে।’
বেনাপোল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। শুধু মরিচ না, সব সবজি এবং পেঁয়াজের দামও আকাশছোঁয়া।’
তিনি বলেন, ‘পূজার কারণে পোর্ট বন্ধ থাকায় বাজারে বড় বড় ব্যবসায়ীরা বস্তা বস্তা কাঁচামরিচ আর পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছিলেন দাম বেশি পাওয়ার আশায়। আমদানি স্বাভাবিক হলে আবার দাম কমে যাবে।’
Advertisement
বেনাপোল বন্দরের পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, ‘পেঁয়াজে তেমন পড়তা না থাকায় এখন কাঁচামরিচ আমদানি করছি। বর্তমান মরিচ আমদানি অনেক বেশি হচ্ছে। বাজারে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি শিগগিরই কেটে যাবে।’
শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াসিন জানান, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রসিদ, মূল্যতালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কি না সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মরিচের দামে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না তাও যাচাই-বাছাই করা হবে।
জামাল হোসেন/এসআর/জেআইএম