খেলাধুলা

কেড়ে নেয়া হলো কোচ-অধিনায়কের একাদশ বাছাইয়ের ক্ষমতা

দীর্ঘদিন পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পর কোথায় একটু স্বস্তি খুঁজবে পাকিস্তান, তা না করে শুরু করেছে নতুন বিতর্ক। যে বিতর্কের জের ধরে দলটির টেস্ট কোচ জেসন গিলেস্পি নিজের হতাশার কথা প্রকাশ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না পাকিস্তানের ক্রিকেটে। দেশের মাটিতে অনেকদিন পরে টেস্ট জয়ের কয়েক দিনের মধ্যে নতুন বিতর্ক দেখা দিল পিসিবির সিদ্ধান্তে। টেস্ট দলের কোচ জেসন গিলেসপিকে প্রথম একাদশ নির্বাচনের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এমনকি অধিনায়ক শান মাসুদকেও একাদশ মাথা গলাতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। বরং একাদশ বাছাই করারও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্বাচক কমিটিকে। এই কমিটিতেই রয়েছেন সাবেক আম্পায়ার আলিম দার। তাকে পাকিস্তান ক্রিকেটের নির্বাচক করা নিয়েই বিতর্ক হয়েছিল।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হয়েছে পাকিস্তানের তৃতীয় টেস্ট। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৬৭ রানে অলআউট হয়েছে ইংল্যান্ড। পাকিস্তান ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৩ রানে প্রথম দিন শেষ করেছে।

Advertisement

ম্যাচ শুরুর আগেই একাদশ নির্বাচন করা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে পিসিবি। খেলা চলাকালীন প্রতিটি দলেরই টিম ম্যানেজমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ থাকেন কোচ এবং অধিনায়ক। ম্যাচ চলাকালীন প্রায় সব সিদ্ধান্তই তারা নিয়ে থাকেন। নির্বাচক কমিটি নির্দিষ্ট একটি টুর্নামেন্ট, সিরিজ বা ম্যাচের জন্য স্কোয়াড তৈরি করে দিতে পারেন; কিন্তু একাদশ তৈরি করার একমাত্র এখতিয়ার টিম ম্যানেজমেন্টের। পাকিস্তান ক্রিকেটে সেই নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটানো হলো। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টের আগের দিন গিলেস্পি বলেন, ‘ম্যাচের পরে পিসিবি কর্মকর্তারা আমাকে এসে বলেন, এখন থেকে নতুন নির্বাচন কমিটিই সব সিদ্ধান্ত নেবেন। একাদশ নির্বাচনে আমার কোনও ভূমিকা থাকবে না আর। তাই আমি এখন থেকে শুধু ম্যাচের কৌশল তৈরি করব। আপাতত একাদশ নির্বাচন থেকে নিজেকে দূরে রাখছি। ছেলেদের থেকে সেরা ক্রিকেট বের করে আনার চেষ্টা করছি।’

নিজের হতাশার কথা জানিয়ে স্কাই স্পোর্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জেসন গিলেস্পি বলেন, ‘টাইম টু টাইম আমার কাজের স্কোপ কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। বোর্ডের সঙ্গে আমার স্পষ্ট যোগাযোগটা খুবই জরুরি। তারা কি চায়, আমি কি চাই- এসব বিষয়ে সব কিছু স্পষ্ট থাকা দরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিষয়টা হচ্ছে, আমি যখন পাকিস্তান ক্রিকেটে আসি, তখন আমি বলেছিলাম, যে আমার একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে আমাদের যোগাযোগটা আরও নিবিড় করতে হবে। আমি সে দিকেই সবচেয়ে বেশি ফোকাস দিয়েছি। সুতরাং, আপনি যখন নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না, কাজের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখিন হবেন, তখন তো এ ধরনের হতাশা তৈরি হবেই। আমি যে কারণে এখানে এসেছি, তা করতে পারছি না।’

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এক সূত্র বলছে, ‘টেস্ট কোচ গিলেস্পি এবং সাদা বলের কোচ গ্যারি কার্স্টেনকে এই আশ্বাস দিয়েই নিয়ে আসা হয়েছিল যে দলের ব্যাপারে সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের উপরেই থাকবে। সেটা এখন বদলে গেছে। অন্তত গিলেসপির ক্ষেত্রে তো বটেই।’

Advertisement

বিস্মিত হয়ে এক সমর্থক সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘অবাক করার মতো ঘটনা। কোচ এবং নির্বাচকদের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং যোগাযোগ যে কোনও দলের সাফল্যে মূল্যে।’

আইএইচএস/