ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি ও প্রবল বাতাস শুরু হয়েছে। এতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে উপকূলীয় এলাকার লাখ লাখ কৃষকের।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে জেলার কলাপাড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে কৃষকের কষ্টার্জিত শীতকালীন সবজি, আমন বেশীরভাগ এলাকায় ফলন দিতে শুরু করেছে। তবে এ মূহুর্তে যদি ভারি বৃষ্টি আর বন্যা হয় তাহলে নষ্ট হতে পারে কোটি কোটি টাকার ধানের উৎপাদন।
এনিয়ে আমরা কথা বলি উপজেলার হলদিবাড়িয়া এলাকার কৃষক মজিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, আমরা উপকূলের কৃষক হিসেবে বেশীরভাগ সময় ক্ষতির মুখে পড়ি। অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি লবণাক্ততার পরে যদি আবার এত বড় বন্যা হয় তাহলে আমাদের সব শেষ।
নীলগঞ্জ এলাকার কৃষক সাইদুল হক জানান, এ মুহূর্তে অতি বাতাসে ধানগাছগুলো ভেঙে যায় তাহলে ফলন নষ্ট হবে। চাষাবাদ করে আমি তিন লাখ টাকা ঋণী। ধান বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবো। এখন আল্লাহ যা করবে তাই হবে।
Advertisement
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসেন বলেন, এ বছর উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৭০০ হেক্টর। ৩৮০ হেক্টর জমিতে সবজি। ইতোমধ্যে ২৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ শেষ করেছে কৃষক। এখন পর্যন্ত বন্যায় এ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এদিকে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল। বড় বড় ঢেউ তীরে আঁচড়ে পড়ছে। ঘূর্ণিঝড় দানা পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। তাই পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা আক্তার জাহান বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
Advertisement
আসাদুজ্জামান মিরাজ/আরএইচ/জেআইএম