নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে চলছে অবাধে মা ইলিশ নিধন। মৎস্য অধিদপ্তর যে ট্রলারের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে, সেই ট্রলারের চালকের নেতৃত্বে টাকার বিনিময়ে জেলেদের মাছ ধরতে সহযোগিতা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে দেখা যায়, মাছ ধরার কয়েকশ ডিঙ্গি নৌকা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো নদী। অভিযোগ রয়েছে, ইলিশ রক্ষা অভিযান দলের মধ্যে থাকা কিছু অসাধু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই অবাধে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। ওই অসাধু ব্যক্তিরা বিশেষ সুবিধা নিয়ে প্রশাসনের অভিযানে নামার খবর জেলেদের কাছে পৌঁছে দেন। এতে জেলেরা আগে থেকে সতর্ক হয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। অভিযানিক দল সরে গেলে পুনরায় নদীতে জাল নিয়ে নেমে পড়ছেন তারা। তবে নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যেসব জেলে মাছ শিকার করছেন, তাদের বেশিরভাগই মৌসুমি জেলে বলে দাবি করেছেন প্রকৃত জেলেরা।
ইলিশ মাছ ধরার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের একাধিক দল নদীতে অভিযান চালায়। এসব অভিযানে দ্রুতগতির ট্রলার ও স্পিডবোট ব্যবহার করা হয়। এসব ট্রলারের যারা মাঝি থাকেন তারাই জেলেদের কাছে অভিযানের সংবাদ পৌঁছে দেন। এমনকি অভিযানে থাকা মাঝিরা ইলিশ মাছ ধরা এবং বিক্রির সঙ্গে জড়িত।
তাদেরই একজন নলছিটি মৎস্য অধিদপ্তরের ট্রলার চালক গৌতম ও ঝালকাঠি মৎস্য বিভাগের ট্রলারচালক সুমন মাঝি। তাদের ট্রলার নিয়ে মৎস্য কর্মকর্তা অভিযানে নামেন। অভিযোগ রয়েছে, গৌতম ও সুমন জেলেদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অভিযানে নামার সংবাদ জেলেদের কাছে আগাম ফাঁস করে দেন। গৌতম ইলিশ শিকার, বিক্রি ও পাচারের সঙ্গেও রয়েছে।
Advertisement
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রলারচালক গৌতম ও সুমন। তারা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে মৎস্য কর্মকর্তারা থাকেন। আমরা কোনো জেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খবর দেই না। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রমনী কুমার মিস্ত্রি বলেন, অভিযানে নামলে কারোর মোবাইল করার সুযোগ থাকে না।
দীর্ঘ ৫ বছর ধরে অভিযানে একই ট্রলারচালক রাখা হয়েছে কেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘গৌতমের ট্রলারের গতি বেশি হওয়ার কারণে তাকেই নেওয়া হয়।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ট্রলার চালকদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হবে।
Advertisement
আতিকুর রহমান/এসআর/এমএস