ধর্ম

সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে সকাল-সন্ধ্যা যে দোয়া পড়বেন

সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে সকাল-সন্ধ্যা যে দোয়া পড়বেন

আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা, প্রার্থনা করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। দোয়ার মাধ্যমে যেমন আল্লাহর আনুগত্য ও রহমত লাভ করা যায়, আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচা যায়, শয়তানের ধোঁকা ও দুনিয়াবি বিপদ-আপদ থেকে বেঁচে থাকা যায়, একইভাবে দোয়ার মাধ্যমে ঈমানও প্রকাশ পায়। আল্লাহর প্রতি বান্দার ভরসা ও নির্ভরতা প্রকাশ পায়। বান্দার বিনয় ও অহংকারহীনতা প্রকাশ পায়। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন,

Advertisement

وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ

তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমার কাছে দোয়া কর, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত হতে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে। (সুরা গাফির: ৬০)

দুনিয়ার জীবনে নিরবচ্ছিন্ন সুখ-সাচ্ছন্দ্য কম মানুষই পায়। জীবনে নানা রকম সমস্যা, সংকট থাকেই। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে, বিপদ-আপদ আসে। বিভিন্ন রকম দুশ্চিন্তা, আশংকা আমাদের অন্তরকে অস্থির করে রাখে। এ রকম অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ, আল্লাহর ওপর ভরসা ও দোয়াই ‍মুমিনের সম্বল।

Advertisement

হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি দোয়া শিখিয়েছেন, যে দোয়াটি সকালে ও সন্ধ্যায় সাত বার করে পাঠ করলে দুনিয়া ও আখেরাতের সব দুশ্চিন্তার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট হবেন। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় সাতবার বলে,

حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হু আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম

অর্থ: আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আমি তার ওপর ভরসা করি এবং তিনি মহান আরশের রব।

Advertisement

তাহলে তাকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে এমন সব বিষয়ে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হবেন। (ইবনুস সুন্নী ফি আমালিল ইয়াওমি ওয়াল-লাইলাহ: ৭১)

এ দোয়াটিতে আল্লাহর দৃঢ় বিশ্বাস ও ভরসা প্রকাশ পায় যা আদর্শ মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কঠিন বিপদমুহূর্তে এ দোয়াটি পাঠ করেছিলেন আল্লাহর দুজন নবি; হজরত ইবরাহিম (আ.) এবং আমাদের নবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.)। আল্লাহর নবি হজরত ইবরাহিমকে (আ.) তার সম্প্রদায় যখন আগুনে নিক্ষেপ করে, তখন তিনি এ দোয়াটি পড়েছিলেন। আমাদের নবি হজরত মুহাম্মাদও (সা.) এ দোয়াটি পড়েছিলেন, যখন মুসলমানরা ওহুদে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে, অনেকে শহিদ হন, এরপর খবর আসে কাফেররা মদিনা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। (সহিহ বুখারি: ৪৫৬৩)

ওহুদের বিপর্যয়ের পর কাফেরদের মদিনা আক্রমণের প্রস্তুতির খবর শুনে নবিজি (সা.) ও মুসলমানরা আল্লাহর ওপর যে দৃঢ় ভরসার কথা প্রকাশ করেছিলেন তার প্রশংসা করে কোরআনে আল্লাহ তআলা বলেন, যারা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে জখমপ্রাপ্ত হওয়ার পরও, তাদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্ম করেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। যাদেরকে মানুষেরা বলেছিল যে, ‘নিশ্চয় লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে ভয় কর’। কিন্তু তা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক’! (সুরা বাকারা: ১৭২, ১৭৩)

ওএফএফ/এএসএম