বিনোদন

এবার কি হবে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব?

সেই ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮, টানা ছয়বার অনুষ্ঠিত হয়েছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব। দেশি-বিদেশি শিল্পীদের বাদ্যযন্ত্র আর ধ্রুপদী সুরের মূর্ছনায় সিক্ত হয়েছেন দেশের সংগীত পিপাসুরা। প্রতি বছরই হাজার হাজার মানুষ হাজির হয়েছেন উচ্চাঙ্গ সংগীতের মিলনমেলায়। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তারা সুরের অমিয় ধারায় স্নান করেছেন।

Advertisement

২০১৪ সালে সারাদেশে আগুন সন্ত্রাসের সময়ও নির্বিঘ্নে এ উৎসব চলেছে। এমনকি ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানের মতো ভয়াবহ ঘটনার পরও বিদেশি শিল্পীরা বাংলাদেশে এসেছিলেন গান শোনাতে। আর দেশের মানুষও এসেছিলেন বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো।

২০১৭ সালে ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশে আসা উপলক্ষে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আর্মি স্টেডিয়াম বরাদ্দ না দেওয়ায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল উৎসব আয়োজন। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে উৎসব আয়োজন করা হয়। আর্মি স্টেডিয়ামের পরিবর্তে ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে ২৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর বসেছিল সেই বছরের উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসবের আসরটি।

দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠা এই আয়োজনটি হঠাৎ করে ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৯ সালেও আয়োজনটি হয়নি। সে বছর বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘নভেম্বরে উৎসব করার পরিকল্পনা ছিলো। চেষ্টা করছিলাম এবারে পুরনো ভেন্যুতেই ফিরে যাওয়া যায় কী না। কিন্তু সম্ভব হয়নি। আমাদের উৎসব তো রাতব্যাপী চলে। সারারাত নিরাপত্তা নিয়ে জটিলতা থাকায় অনুমতি পাওয়া যায়নি।’

Advertisement

সবার প্রত্যাশা ছিলো সব জটিলতা কাটিয়ে আবার বসবে উচ্চাঙ্গ সংগীতের মিলনমেলা। কিন্তু দেখতে দেখতে ৬ বছর কাটলেও উৎসবটি নিয়ে জটিলতা কাটেনি। আর হয়নি বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব। এ নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনাই শোনা গেছে বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে। বেঙ্গলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও শোনা যেত, স্বৈরাচার সরকারে স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের বলি ছিল ক্লাসিক মিউজিকের এই আয়োজনটি।

সেই সরকার আর নেই। নতুন দিনের আলোয় নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ চলছে নানা সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তাই সংগীত পিপাসুরা প্রত্যাশা করছেন আবারও বসবে দ্রুপদী গানের আসরটি।

বেঙ্গল কি ভাবছে? খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল, উৎসবটি আবারও আয়োজন করার কথা ভাবছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। তবে বিষয়টি পরিকল্পনা পর্যায়েই রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘উৎসবটি নিয়ে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে বিস্তারিত।’

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব হবে- সেই সিদ্ধান্ত আসুক। সব জটিলতা কাটিয়ে বসুক দেশ বিদেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের সুর-তাল-লয় আর বাদ্যের মিলনমেলা। নানা ক্ষত নিয়ে নতুন বাংলাদেশের পথে এগিয়ে চলা মানুষের হৃদয় সিক্ত হোক সংগীতের অমৃত বরষায়।

Advertisement

এলএ/এমএস