তথ্যপ্রযুক্তি

কী-বোর্ডে বর্ণগুলো এলোমেলো থাকে কেন?

নিশ্চয়ই কমবেশি সবাই জানেন ল্যাপটপ, ডেস্কটপ বা মোবাইলের কী-বোর্ডের বর্ণগুলো বইয়ের মতো সাজানো থাকে না। একদম যারা নতুন তাদের কী-বোর্ড ব্যবহারের সময় একটু অসুবিধা হয় বটে। কিন্তু যারা নতুন তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে কিছুদিনেই। কিন্তু জানেন কি, কেন কী-বোর্ডের বর্ণগুলোকে পরপর না সাজিয়ে এলোমেলো করে সাজানো হয়েছে?

Advertisement

ল্যাপটপ, কম্পিউটার হোক বা মোবাইল ফোন। যে কোনো কী বোর্ডের দিকে তাকালেই দেখা যাবে সেখানে এ বি পরপর লেখা নেই। ভেবে দেখেছেন কী বোর্ডে এ,বি,সি,ডি পর পর লেখা থাকে না কেন?

কীবোর্ডে ব্যবহৃত কোয়ার্টি ফরম্যাট বহু দশক ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর জন্ম কম্পিউটারের জন্মের অনেক আগে টাইপরাইটারের যুগে। বর্তমানে কীবোর্ডে ব্যবহৃত ফরম্যাটকে বলা হয় কোয়ার্টি ফরম্যাট। প্রতিটি কি বোর্ডেই লেখা থাকে ইংরাজি বর্ণমালার অক্ষর। কিন্তু এই বিশেষ ফরম্যাট মেনে বর্ণগুলো পরপর লেখা থাকে না।

আরও পড়ুন গুগল শিটে ছবি বা লোগো যুক্ত করবেন যেভাবে

টাইপিংকে সুবিধাজনক এবং সহজ করার জন্য, বর্ণগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যাতে ঘন ঘন একত্রিত হওয়া বর্ণগুলোকে দূরে রাখা হয়। যেহেতু ‘টিএইচ’ এবং ‘এসএইচ’ প্রায়ই একত্রিত হয়, তাই এই বর্ণগুলো বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল।

Advertisement

কোয়ার্টি কী-বোর্ডর উদ্ভাবন হয়েছিল ১৮৭৩ সালে। এর জনক বলা যায় ক্রিস্টোফার ল্যাথাম শোলসকে। এই লেআউটটি মূলত যান্ত্রিক টাইপরাইটারদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল এবং টাইপিং গতি কমিয়ে জ্যামিং প্রতিরোধ করাই ছিল এর উদ্দেশ্যে। কোয়ার্টি কী-বোর্ডের চেয়েও বেশি দক্ষ লে-আউট রয়েছে। যাদের কী-বোর্ড ডিজাইনে প্রয়োগ করা হয়েছে। যেমন ডভোরাক এবং কোলেমাক। কিন্তু কোয়ার্টি এখনো সর্বাধিক ব্যবহৃত। যারা নতুন টাইপিং শেখেন তাদের যদি এ,বি,সি,ডি-র মতো অক্ষর পর পর দেখিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে সুবিধাই হয়। কিন্তু এই জায়গাতেই কোয়ার্টি বিশেষত্ব। এই জিজাইন আবিষ্কারের সময় উদ্দেশ্যই ছিল টাইপিংয়ের গতি কমিয়ে দেওয়া। যাতে চেনা বর্ণমালা ঝড়ের গতিতে কেউ টাইপ না করে ফেলতে পারেন। কিন্তু হল উল্টো। মানুষ এইকোয়ার্টিতেও যথেষ্ট গতিতে টাইপ করতে পারে।

তার একটা কারণ কিন্তু এর ডিজাইন। এই লে-আউটে সব থেকে বেশি ব্যবহৃত বর্ণগুলোকে সাধারণত পাওয়া যায় একেবারে মাঝখানে ঘেঁষে। যাতে টাইপ করার সময় আঙুল সঞ্চালন করতে খুব বেশি বেগ পেতে না হয়।

তবে কোয়ার্টি কী-বোর্ড প্রতিস্থাপন করা হলে, লাখ লাখ কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে নতুন কী-বোর্ড সেটিংয়ের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে, যার ফলে লোকসান হবে। এছাড়া কম্পিউটার সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের সঙ্গে নতুন লেআউট সামঞ্জস্য করতে কোম্পানিগুলোকে নতুন করে কাজ করতে হবে।

আরও পড়ুন ল্যাপটপ স্লো হলে যা করবেন যে ৪ শব্দ গুগলে সার্চ করলে মজার ব্যাপার ঘটবে

সূত্র: স্মিথোশিয়ান ম্যাগাজিন

Advertisement

কেএসকে/এএসএম