নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এমএসআর দরপত্র আহ্বানের একই বিজ্ঞাপন বিধিভঙ্গ করে ২২ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। দরপত্রের ‘নেতিবাচক সংবাদ’ ঠেকাতে সরকারি অর্থের এমন অপচয় করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
Advertisement
বুধবার (১৬ অক্টোবর) ক্রয় কমিটির সভায় ১৭ অক্টোবর এমএসআর দরপত্র আহ্বান, ১৪ নভেম্বর দরপত্র (সিডিউল) বিক্রির শেষ তারিখ এবং ১৭ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে রক্ষিত দরপত্রের বাক্স খোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও ক্রয় কমিটির সভাপতি ডা. মো. হেলাল উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন ক্রয় কমিটির সদস্য ও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম এবং সদস্য সচিব জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. শিরিন সুলতানা।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দরপত্র আহ্বানের ২৪ ইঞ্চি (চার কলাম ছয় ইঞ্চি) বিজ্ঞাপনটি ২২ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। এগুলো হলো প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, ডেইলি স্টার, দৈনিক ইনকিলাব, ইত্তেফাক, মানবজমিন, কালবেলা, শেয়ার বিজ, নয়া দিগন্ত, দিনকাল, সফলবার্তা, দিশারী, আমাদের সময়, আজকের পত্রিকা, ভোরের ডাক, বণিক বার্তা, বাণিজ্য প্রতিদিন, আনন্দ বাজার, আলোকিত বাংলাদেশ, আমার বার্তা, ডেইলি পোস্ট ও আমার সংবাদ।
Advertisement
সরকারি বিধি মোতাবেক ক্রয় বিজ্ঞপ্তি/টেন্ডার/দরপত্র ইত্যাদির জন্য বিজ্ঞাপন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে (একটি বাংলা এবং একটি ইংরেজি) প্রকাশ করতে হবে (কার্যদিবস হলে ভালো)। জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞাপন প্রদানের অতিরিক্ত হিসেবে সর্বাধিক দুটি বহুল প্রচারিত স্থানীয় বা আঞ্চলিক দৈনিক সংবাদপত্রে (দুটি বাংলা অথবা একটি বাংলা এবং একটি ইংরেজি) প্রকাশ করা যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এমএসআর দরপত্রের টেন্ডারে অনিয়মসহ কতিপয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, এ ধরনের অনিয়মের নেতিবাচক সংবাদ ঠেকাতে পত্রিকাগুলোতে নিয়মভঙ্গ করে একই টেন্ডার বিজ্ঞাপন ২২ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও ক্রয় কমিটির সভাপতি ডা. হেলাল উদ্দিন একই বিজ্ঞাপন ২২ পত্রিকায় প্রকাশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। এতে সরকারি বিধিমালা ভঙ্গ করা হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।
ডা. হেলাল উদ্দিন দাবি করেন, নেতিবাচক সংবাদ ঠেকাতে নয়, সাংবাদিকদের অনুরোধে এক বিজ্ঞাপন ২২ পত্রিকায় দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে তাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পদে বদলি করা হয়েছে। তাই সম্মানের স্বার্থে সংবাদটি প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান।
Advertisement
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. অং সুই প্রু মারমা জাগো নিউজকে বলেন, দুটি জাতীয় পত্রিকার অতিরিক্ত একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা যেতে পারে। তবে একই বিজ্ঞাপন ২২ পত্রিকায় দেওয়া সরকারি অর্থের অপচয়। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এএসএম