ধর্ম

অজু করার সময় যে ৩ দোয়া পড়তেন নবিজি (সা.)

ইসলামে পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে অজু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামাজ আদায় ও তাওয়াফ করার জন্য এবং কোরআন স্পর্শ করার জন্য অজু অবস্থায় থাকা বাধ্যতামূলক। জিকির, তিলাওয়াতসহ অনেক আমল অজু ছাড়াও করা যায়, কিন্তু অজু অবস্থায় করলে সওয়াব বেড়ে যায়। কোনো আমলের উদ্দেশ্য ছাড়াও অজু করা, অজু অবস্থায় থাকা সওয়াবের কাজ। বিভিন্ন হাদিসে অজু অবস্থায় ঘুমানোরও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেছেন,

Advertisement

اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَনিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন। (সুরা বাকারা: ২২২)

অজুর ফরজ কাজ চারটি; পুরো চেহারা ধোয়া, উভয় হাত কুনুইসহ ধোয়া, মাথা মাসাহ করা এবং উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া। এ চারটি কাজ সম্পন্ন করলেই অজু হয়ে যায়। তবে অজুতে সুন্নত অনুসরণ করলে, অজুর দোয়াগুলো পড়লে অপরিসীম সওয়াব ও ফজিলত লাভ হয়। অজুর দোয়ার ফলে বান্দা জান্নাত লাভ করে এবং তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হয় বলেও আল্লাহর রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহর রাসুল (সা.) অজুর শুরুতে, মাঝে ও শেষে দোয়া পড়তেন। আমরা এখানে এমন ৩টি দোয়া উল্লেখ করছি যেগুলো রাসুল (সা.) অজু করার সময় পড়তেন:

Advertisement

১. অজুর শুরুতে আল্লাহর রাসুল (সা.) ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পড়তেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে অজুর শুরুতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে না, তার অজু পূর্ণ হয় না। (সুনানে আবু দাউদ)

২. অজুর করার সময় বা অজু শেষে রাসুল (সা.) এই দোয়া পড়তেন:

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي ذَنْبِي وَوَسِّعِ لي فِي داري وَبارِكْ لي في رِزْقِي

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা-গফিরলী যামবী ওয়া ওয়াসসি’ লী ফী দারী ওয়া বারিক লী ফী রিযক্বী।

Advertisement

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার অপরাধ ক্ষমা করুন, আমার ঘর প্রশস্ত করুন এবং আমার রিজিকে বরকত দান করুন। (আমালুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইলাহ লিন-নাসাঈ) ৩. অজু শেষে আল্লাহর রাসুল (সা.) পড়তেন,

أَشهَدُ أَنْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ

উচ্চারণ: আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসূলুহু আল্লাহুম্মা-জআলনি মিনাত-তাওয়াবিনা ওয়াজ-আলনি মিনাল-মুতাতাহহিরিন

অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই; তিনি একক, তার কোন শরিক নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার বান্দা ও রাসুল। হে আল্লাহ আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা হাসিলকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন।

ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, পরিপূর্ণরূপে ওজু করে যে ব্যক্তি এ দোয়া পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সুনানে তিরমিজি)

ওএফএফ/এএসএম