ধর্ম

কবরের চার কোণে গাছের ডাল পুঁতে দেওয়া কি সুন্নত?

আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃতদেহ কবর দেওয়ার পর মৃতের নাজাতের জন্য এমন কিছু বিশেষ ধরনের আমলের প্রচলন দেখা যায় যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। যেমন নতুন কবরের চার কোণে চারজন কোণে দাঁড়িয়ে চার কুল (অর্থাৎ সূরা কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়া, কবরের চার কোণে চারটি তাজা ডাল পুঁতে দেয়া অথবা চারটি খুঁটি হাতে নিয়ে চার কুল পড়া এবং কবরে গেড়ে দেওয়া বা রেখে দেওয়া ইত্যাদি।

Advertisement

এগুলোর কোনোটিই সুন্নত, মুস্তাহাব বা বিশেষ ফজিলতপূর্ণ নয়। এ সব ভিত্তিহীন আমলকে সুন্নত, মুস্তাহাব, বিশেষ ফজিলতপূর্ণ বা মৃতের মুক্তির উপায় বলে বিশ্বাস করা জায়েজ নেই।

মৃত ব্যক্তিকে কবর দেওয়ার পর তার জন্য বেশি বেশি দোয়া করা উচিত, দান-সদকা, কোরআন তেলাওয়াত বা অন্যান্য আমল করে তার জন্য সওয়াব পাঠানো উচিত যেভাবে ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে।

ইসলামের উৎস হলো কোরআন ও রাসুলের সুন্নত অর্থাৎ তার কথা, কাজ ও সমর্থন। কোরআন ও রাসুলের সুন্নত ছাড়া অন্য কোনো সূত্রে আমলের নতুন কোনো ধরন উদ্ভাবন করে তাকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করলে তা হয় দীনের মধ্যে নতুন উদ্ভাবন বা বিদআত। রাসুল (সা.) তার উম্মতকে দীনের মধ্যে নতুন উদ্ভাবিত বিষয় বা বিদআত থেকে বেঁচে থাকতে বলেছেন। রাসুল (সা.) বলেন, সব নতুন উদ্ভাবিত বিষয় থেকে বেঁচে থাকো, সব নতুন উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআত আর সব বিদআতই পথভ্রষ্টতা। (সুনানে তিরমিজি, সুনানে আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)

Advertisement

কবরে খেজুর গাছের কাঁচা ডাল পুঁতে দেওয়া

তবে কবরে খেজুর গাছের এক/ দুটি কাঁচা ডাল পুঁতে দেওয়া আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমল দ্বারা প্রমাণিত। বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, এক দিন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুটি কবরে আজাব হচ্ছে জানতে পেরে একটি খেজুর গাছের ডালকে দুই টুকরা করে কবর দুটিতে গেড়ে দেন। (সহিহ বুখারি: ১/১৮২)

অন্য বর্ণনায় আছে, সাহাবি বুরাইদা আসলামি (রা.) মৃত্যুর আগে অসিয়ত করে যান, যেন তার কবরে খেজুর গাছের দুটি ডাল গেড়ে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ১/১৮১)

এসব বর্ণনা থেকে যেহেতু কবরে খেজুর বা অন্য কোনো গাছের ডাল গেড়ে দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়, তাই কেউ চাইলে মৃত ব্যক্তিকে মাটি দেওয়ার পর কবরে খেজুর গাছ বা যে কোনো গাছের এক/ দুটি ডাল গেড়ে দিতে পারে।

ওএফএফ/এমএস

Advertisement