জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে প্রভাব খাটিয়ে এক হোটেল ব্যবসায়ীর দোকানঘর দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদের বিরুদ্ধে।
Advertisement
কালাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহীম হোসেনের ছত্রছায়ায় জাহিদুল ইসলাম জাহিদ তার অনুসারীদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে এরইমধ্যে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর পৃথক দুটি লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
সরেজমিন এবং লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বাজারে হোটেল ব্যবসা করে আসছেন রেজাউল করিম তালুকদার নাজু। এরইমধ্যে গত আগস্ট মাসে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম জাহিদ সদলবলে ওই হোটেলে প্রবেশ করে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওই ব্যবসায়ীকে জোরপূর্বক হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর ওই হোটেলে তালা ঝুলিয়ে দেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী হোটেল ব্যবসায়ী রেজাউল করিম তালুকদার নাজু জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। কারণ ওই দোকানের উপার্জনে আমার সংসার চলে। আর ওই দিন থেকে দোকানঘরে আমার রেফ্রিজারেটর, চেয়ার, টেবিল, ফ্যানসহ প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল ও আসবাবপত্র আটকে আছে। এ ঘটনার প্রভাবে আমি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে বগুড়া টিএমএসএস হাসপাতালে চিকিৎসা নিই। সুস্থ হয়ে ইউএনও এবং ওসি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি সুবিচার পাবো।
Advertisement
এদিকে হোটেল ঘর দখলের বিষয় স্বীকার করে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জাগো নিউজকে বলেন, বিএনপি সরকারের শাসনামলে ওই দোকানের স্থানে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে তৎকালীন স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ নেতা আ.ন.ম শওকত হাবিব তালুকদার আমাদের কার্যালয়টি ভেঙে দেয়। তারপর সেখানে নতুনভাবে ঘর নির্মাণ করে রেজাউল করিম তালুকদার নাজু। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে উপজেলা এবং জেলার ঊর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশে আমরা ওই ঘরটি দখলে নিয়েছি।
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহীম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বিএনপি সরকারের শাসনামলে ওই দোকানের স্থানে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেটি মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদসহ অন্যরা দখলে নিয়েছে বলে জানি। তবে এ কাজে আমি কোনো নির্দেশ দেইনি। সেটিকে দলীয় কার্যালয় করার কথা নয়। এ ধরনের কোনো নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জাগো নিউজ বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ঘটনাটি আমি কালাই থানায় যোগদানের আগের। তারপরও বিষয়টি আমলে নিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা আক্তার জাহান জাগো নিউজকে বলেন, গত ২০ অক্টোবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Advertisement
আল মামুন/এফএ/জেআইএম