শিবির রগ কাটে—এমন প্রশ্নের জবাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাবি শাখার সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন বলেছেন, ছাত্রশিবির রগ কাটে এমন কোনো রেকর্ড নেই। কেউ কখনো প্রমাণ দিতে পারেনি। ছাত্রশিবিরকে আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে আমাদের নামে নানা ধরনের অভিযোগ তুলেছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপবাদ দিয়েছে।
Advertisement
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধির সঙ্গে সোমবার (২১ অক্টোবর) মতবিনিময় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাবি শাখার সভাপতি এ কথা বলেন।
ছাত্রশিবিরের একজন কর্মীর বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে শিবিরের এই নেতা বলেন, ছাত্রশিবিরের কর্মীদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। তাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে, কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারবে না, ইসলামের বিধিবিধানগুলো পালন করবে, হারাম কাজে লিপ্ত হতে পারবে না।
শিবির নেতা নোমানি হত্যা ও শিবিরের হাতে ২৮ জন নিহতের বিষয়ে রাবি শিবির সভাপতি বলেন, ‘১৯৮৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৩৩ জন মানুষ মারা গেছেন। তার মধ্যে ২৯ জন রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং বাকিরা ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থী। যে ২৯ জন শিক্ষার্থী মারা গেছেন তার মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী। বাকিদের মধ্যে ছাত্রদলের তিনজন, ছাত্রলীগের সাতজন, আবার ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছে তিনজন। এভাবে বিভিন্ন জুলুম-নির্যাতনের শিকার আমরা হয়েছি।’
Advertisement
ছাত্রলীগের ভিতরে ছাত্রশিবিরের অনুপ্রবেশ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের কনস্টিটিউশনে স্পষ্ট আছে কেউ যদি ছাত্রশিবিরে থাকা অবস্থায় অন্য কোনো মতাদর্শে বিশ্বাসী হন, তাহলে তিনি ছাত্রশিবিরের কর্মী হিসেবে আর থাকতে পারবেন না। এটা ক্লিয়ার যে ছাত্রশিবিরের কোনো কর্মী অন্য কোনো সংগঠনের কর্মী হতে পারবেন না।’
প্রকাশ্যে না এসে একে একে আত্মপ্রকাশ করার বিষয়ে আব্দুল মোহাইমিন বলেন, ‘আমরা যে নিজেরা আত্মপ্রকাশ করেছি, এটা কোথাও দেখাতে পারবেন না। এটা সাংবাদিকরা করেছেন। এর আগে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় আমাদের নামে নানা ধরনের মামলা হয়েছে। আগে ছাত্রশিবিরের নাম শুনলে তাকে ধরিয়ে দেওয়া, তার নামে মামলা দেওয়া ও সারারাত ধরে নির্যাতন করা ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে জনগণও এটিকে জায়েজ মনে করে নিয়েছিল। সেসময় ছাত্রশিবিরের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। তারপরও ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তাদের কাজ চালিয়ে গেছে।’
ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের জোর করে পর্দা করানো প্রশ্নে শিবির নেতা মোহাইমিন বলেন, ‘ছাত্রশিবির এসব কাজ করেছে আপনারা দেখেছেন? আমি তো দেখেছি প্রক্টর এ কাজ করেছেন। সন্ধ্যার পর কাপল খুঁজে বেড়ান প্রক্টর। ছাত্রশিবির আদর্শগতভাবে এই কাজটা করতে পারে না। ছাত্রশিবির তাদের আদর্শ প্রকাশ করে। সেই আদর্শ প্রকাশের জায়গা থেকে যার ইচ্ছে আছে সে তা গ্রহণ করতে পারে। যার ভালো লাগবে না সে গ্রহণ করবে না। কাউকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ছাত্রশিবিরের কাজ নয়।’
মনির হোসেন মাহিন/এসআর/এমএস
Advertisement