ক্যাম্পাস

বেরোবিতে ভর্তি হলেন কব্জি দিয়ে লিখে চান্স পাওয়া মিনারা

অবশেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ভর্তি হওয়ার বাধা কাটলো কব্জি দিয়ে লিখে চান্স পাওয়া মিনারা খাতুন। উপাচার্যের সহযোগিতায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।

Advertisement

এর আগে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও টাকার অভাবে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত ছিল মিনারা খাতুনের। বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী তার ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জন্ম থেকেই দুই হাতে কোনো আঙুল নেই মিনারার। তবুও অদম্য ইচ্ছাশক্তি বলে হাতের কব্জির সাহায্যে লিখতে শেখেন তিনি। দুই হাতের আঙুল না থাকলেও কব্জির সাহায্যে লিখেই তিনি একে একে পিইসি, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় পাস করেন। পরে কারমাইকেল কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন।

২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে অ্যাকাউন্টিং বিভাগে ভর্তি হন। এবার দ্বিতীয় বারেরমতো রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান মিনারা। তবে অর্থাভাবে বেরোবিতে ভর্তি হওয়া ছিল অনিশ্চিত। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের উদ্যোগে সোমবার (২১ অক্টোবর) ভর্তি হন তিনি।

Advertisement

মিনারা খাতুন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল দক্ষিণ বাঁধ এলাকার দিনমজুর রফিকুল ইসলাম ও মৃত মর্জিনা বেগমের মেয়ে। দুই বোনের মধ্যে তিনি ছোট। মায়ের মৃত্যুর পর সাতবার নদীতে বাড়ি ভাঙনের শিকার বাবা রফিকুল ইসলাম মিনারার খালাকে বিয়ে করেন।

বাবা রফিকুল ইসলাম পেশায় দিনমজুর। অভাবের সংসার। নুন আনতে পানতা ফুরায়। নদী ভেঙে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। পরে আশ্রিতদের ঘর ভেঙে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে পরের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে কোনোরকমে পরিবার নিয়ে দিনাতিপাত করছেন মিনারার বাবা রফিকুল ইসলাম।

মিনারা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল ভার্সিটিতে পড়বো। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। আজ থেকে আমি পাবলিকিয়ান। ক্যাম্পাসের বড় ভাইয়া-আপুদের হেল্প ভুলবেন না কখনো। আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য উপাচার্য স্যারকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

এসআর/এএসএম

Advertisement