খেলাধুলা

ওভারে তাইজুলের জোড়া শিকার, হঠাৎ চাপে দক্ষিণ আফ্রিকা

মিরপুরের স্পিন পিচে প্রথম ইনিংসে ১০০ রানের আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধেই বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।

Advertisement

ইনিংসের ২৮তম ওভারে জোড়া শিকার ধরেছেন তাইজুল। ওভারের দ্বিতীয় বলে পিচে থিতু হয়ে থাকা টনি ডি জর্জিকে শর্ট লেগে মাহমুদুল হাসান জয়ের ক্যাচ বানান তিনি। ৭০ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফেরত যান প্রোটিয়া ওপেনার।

ওই ওভারের শেষ বলে নতুন ব্যাটার ম্যাথিউ ব্রিটজকে (৪ বলে ০) বোল্ড করে দেন তাইজুল। দলীয় ৯৯ রানে ৫ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৩০ ওভারের খেলা শেষে ৫ উইকেটে ১০৬ রান। রায়ান রিকেলটন ২৬ আর কাইল ভেরেইনে ২ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে স্কোর লেভেল করে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

Advertisement

সফরকারীদের শিবিরে শুরুতেই আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে প্রোটিয়া ওপেনার এইডেন মার্করামকে বোল্ড করে দিয়েছেন ডানহাতি টাইগার পেসার। হাসানের ভেতরে ঢোকা বল ডানহাতি ব্যাটার মার্করামের (৭ বলে ৬) ব্যাটের কাণা স্পর্শ করে স্টাম্প ভেঙে দেয়। দলীয় ৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দ্বিতীয় উইকেটে পিচে সেট হয়ে ব্যাটিং করছিলেন টনি ডি জর্জি ও ত্রিস্টান স্টাবস। ৪১ রানের জুটিও করে ফেলেছিলেন তারা। অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার এই জুটি ভাঙলেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বল ডানহাতি স্টাবসের ব্যাটের কাণায় লেগে স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে জমা হয়। ২৭ বলে ২৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান প্রোটিয়া ব্যাটার।

তৃতীয় সেশনের শুরুতে আরও একটি শিকার ধরলেন তাইজুল ইসলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার ডানহাতি ব্যাটার ডেভিড বেডিংহামকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান তিনি। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২৫ বলে ১১ রান করেন বেডিংহাম। ৭২ রানে তৃতীয় হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

আজ সোমবার শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দুই সেশনও টেকেনি বাংলাদেশ। ৪১.১ ওভার ব্যাট করে ১০৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের তোপে ৩০ রানের বেশি করতে পারেনি কোনো ব্যাটার।

Advertisement

দিনের শুরুতেই ব্যাটিং ব্যর্থতার আভাস দেয় বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান ওপেনার সাদমান ইসলাম। ৪ বল খেলে ০ রানে সাজঘরে ফেরত গেছেন এই ব্যাটার। প্রোটিয়া পেসার উইয়ান মুলদারের বলে দ্বিতীয় স্লিপে এইডেন মার্করামের হাতে ক্যাচ হন বাঁহাতি সাদমান। দলীয় ৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এক ওভার বিরতি দিয়ে আউট যান মুমিনুল হকও। ৬ বলে মাত্র ৪ রান করে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন বাহাতি ব্যাটার। মুলদারের বলে উইকেটরক্ষক কাইল ভেরেইনের হাতে ক্যাচ হন তিনি।

ষষ্ঠ ওভারে আউট হন নাজমুল হোসেন শান্ত (৭ বলে ৭)। মুলদারের বলে শর্ট মিড অফে কেশব মহারাজের তালুবন্দি হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অর্থাৎ প্রথম ৩টি উইকেটই নেন মুলদার। ২১ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের।

এরপর বাংলাদেশকে টেনে তুলতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু পারলেন না। দক্ষিণ আফ্রিাকার পেসার কাগিসো রাবাদার বল যেন বুঝে উঠতে পারছেন না অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। শেষমেশ উইকেট দিয়ে আসলেন তিনিও। প্রোটিয়া ডানহাতি পেসার উপড়ে ফেলেন ডানহাতি মুশফিকের দুটি স্টাম্প। ২২ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফেরত আসেন মুশফিক।

৪০ রানে ছিল না ৪ উইকেট। চরম ব্যাটিং বিপর্যযে পড়া বাংলাদেশকে সামান্য স্বস্তিও এনে দিতে পারলেন না লিটন দাস। দলীয় ৫ রান যোগ না হতেই আউট যান উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১৩ বলে খেলে মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান ডানহাতি লিটন। কাগিসো রাবাদার বলে স্লিপে ত্রিস্টান স্টাবসের হাতে ক্যাচ হন তিনি।

লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগে আউট হন মেহেদী হাসান মিরাজ (২৪ বলে ১৩)। দলীয় ৬০ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার কেশব মহারাজের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। আম্পায়ারের সরাসরি আউটের ঘোষণার পর রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ডানহাতি ব্যাটার।

পিচে থিতু হয়ে থেকেও ভালো ইনিংস খেলতে পারেননি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ৯৭ বল খেলে মাত্র ৩০ রান করতে পারেন তিনি। প্রোটিয়া স্পিনার ডেন পিডটের বলে বোল্ড হন ডানহাতি ব্যাটার।

অভিষেক ম্যাচ রাঙাতে পারেননি জাকের আলী অনিক। ১৫ বলে মাত্র ২ রান করে মহারাজের বলে স্টাম্পড হন ডানহাতি ব্যাটার। স্কোরকার্ড ৭৬ রানের স্থির থাকতেই ২টি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নাইম হাসান ৮ আর তাইজুল ইসলাম করেন ১৬ রান। ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন হাসান মাহমুদ।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা, উইয়ান মুলদার ও কেশব মহারাজ।

এমএইচ/এএসএম