ধর্ম

মৃত সন্তানের জন্য আকিকা করতে হবে কি?

জীবিত সন্তানের জন্য আকিকা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেছেন, সব শিশু তার আকিকার সাথে দায়বদ্ধ অবস্থায় থাকে। জনুগ্রহণ করার সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে জবাই করতে হবে, তার নাম রাখতে হবে এবং তার মাথা মুণ্ডন করে দিতে হবে। (সুনানে তিরমিজি: ১৫২২) রাসুল (সা.) একটি ছাগল জবাই করে তার নাতি হাসানের (রা.) আকিকা করেছিলেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৬০২)

Advertisement

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) পুত্র সন্তানের জন্য দুটি ও কন্য সন্তানের জন্য একটি পশু আকিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিজি) হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইহুদিরা পুত্রসন্তানের আকিকা করত কিন্তু কন্যাসন্তানের আকিকা করত না। আপনারা পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং কন্যাসন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে হলেও আকিকা করুন। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি: ১৯৭৬০)

আকিকা করার আগে সন্তান মারা গেলে আর আকিকার তেমন গুরুত্ব থাকে না। মৃত সন্তানের জন্য আকিকা করা ইসলামি আইনবিশারদগণের নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী সুন্নত নয়। তবে কোনো কোনো ফকিহ মৃত সন্তানের জন্যও আকিকা করার কথা বলেছেন। তাই কেউ চাইলে মৃত সন্তানের জন্য আকিকা করতে পারে।

মৃত সন্তানের জন্য কোরবানি

ঈদুল আজহার দিন মৃত সন্তানের জন্য কোরবানি করা যেতে পারে। অন্যান্য নফল ইবাদতের মতো মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে নফল কোরবানি করেও তার ও নিজের সওয়াবের আশা করা যায়। আয়েশা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি নবিজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললো, আমার মা হঠাৎ মারা গেছেন। তার ব্যাপারে আমি ধারণা করি, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন তবে সাদাকার অসিয়ত করতেন। আমি যদি তার পক্ষে সাদাকা্ করি, তবে কি আমার এ কাজের কোন সাওয়াব হবে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। (সহিহ মুসলিম: ৪০৭৪)

Advertisement

নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজের পক্ষ থেকে কোরবানি করার পাশাপাশি নিজের উম্মতের পক্ষ থেকেও কোরবানি করতেন। আয়েশা (রা.) ও আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোরবানির ইচ্ছা করলে দুটি মোটাতাজা, মাংসল, শিংযুক্ত, ধুসর বর্ণের ও ছিন্নমুষ্ক মেষ ক্রয় করতেন। এর একটি নিজের উম্মাতের যারা আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেয় এবং তাঁর নবুয়াতের সাক্ষ্য দেয় তাদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে কোরবানি করতেন। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২২)

ওএফএফ/এএসএম