পুঁজিবাজারে ‘জেড’ গ্রুপে স্থানান্তর করা যেসব কোম্পানি এরই মধ্যে অনুমোদিত লভ্যাংশের ন্যূনতম ৮০ শতংশ বিতরণ করেছে, সেসব কোম্পানি ‘জেড’ গ্রুপ থেকে আগের গ্রুপে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
Advertisement
রোববার (২০ অক্টোবর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, পুঁজিবাজারে ‘জেড’ গ্রুপে স্থানান্তর করা যেসব কোম্পানি এরই মধ্যে অনুমোদিত লভ্যাংশের ন্যূনতম ৮০ শতংশ বিতরণ করেছে, সেসব কোম্পানি ‘জেড’ গ্রুপ থেকে প্রযোজ্য গ্রুপে পরিবর্তন করার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জসমূহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এছাড়া কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কমিশন থেকে নিবন্ধিত বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের নামে ‘পিএলসি’ যুক্ত করার জন্য নাম পরিবর্তন জনিত কোনো ধরনের ফি আদায় না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিএসইসির কমিশন সভায়।
Advertisement
এদিকে বিএসইসির সঙ্গে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএসইসি ভবনে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, ফারজানা লালারুখ এবং আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেনসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিএসইসি’র চেয়ারম্যান বলেন, দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও কল্যাণের কেন্দ্রেবিন্দুতে রয়েছে সংস্কার। দেশের পুঁজিবাজারের টেকসই ও যথাযথ সংস্কারের জন্য বিএসইসি’র গঠিত টাস্কফোর্স স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং সংস্কারের পরিকল্পনায় টাস্কফোর্স’র অধীন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত বেশকিছু ফোকাস গ্রুপ কাজ করবে।
তিনি বলেন, দেশের পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী ও সরকারি মালিকানাধীন বিনিয়োগ কোম্পানি হিসেবে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আইসিবি-কে বিশেষ অবদান রাখতে হবে। পুঁজিবাজারের টেকসই ও যথাযথ সংস্কার আনয়নে আইসিবি সক্রিয়, দায়িত্বশীল ও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
দেশের পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নের জন্য মিউচুয়্যাল ফান্ডের বিকাশ এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি জরুরি এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশে মিউচুয়্যাল ফান্ডকে আরও বেশি জনপ্রিয় করতে এবং এই খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইসিবি-কে আরও উদ্যোগী হতে হবে।
Advertisement
মতবিনিময় সভায় জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংস্থানের নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ, সিকিউরিটিজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে ট্রেক হোল্ডারস মার্জিন রেগুলেশন্স’র সংস্কার, গ্রাহকের সমন্বিত ব্যাংক হিসাবের সুদ বণ্টন সংশ্লিষ্ট বিধিমালার সংস্কার, ব্রোকারেজ কমিশনের যুক্তিসংগত নিম্নসীমা নির্ধারণ, ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন ও সুদ প্রদান সহজীকরণ, দেশে বিদ্যমান সরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ, মার্কেট মেকার কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন, স্টক ব্রোকারের মাধ্যমে ট্রেজারি বিলের অকশনে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা-পর্যটন খাতের উন্নয়নে বিশেষায়িত বন্ড-গ্রিন ফাইন্যান্সিংসহ ব্লু-ইকোনোমিক জোন ভিত্তিক বিভিন্ন প্রোডাক্ট/সেবা চালুকরণ, সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনের ক্ষেত্রে শেয়ার সেটেলমেন্ট-এর সময়সীমার সংস্কার, পুঁজিবাজারের কর সংক্রান্ত পলিসির সংস্কার ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাবনা উঠে আসে।
এমএএস/ইএ/জিকেএস