বর্তমানে আদালত পাড়ায় চেক, যৌতুক, মাদক ও পারিবারিক ঝামেলা নিয়ে বেশি বেশি মামলা হচ্ছে। মানুষ ঘুরে ফিরে এসব অপরাধে বেশি জড়াচ্ছেন। এগুলোর মধ্যে বর্তমানে চেকের মামলাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। চেকে লেনদেন নিয়ে ইদানিং ঝামেলা বেশি হচ্ছে। তাই চেক কী ও কেন, ডিজঅনার কী ও কখন হয়, চেকের মামলায় জিততে হলে কোন কোন উপাদান থাকা জরুরি, কতদিনের মধ্যে মামলা করবেন, মামলা করার প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছি।
Advertisement
আজকে আমরা জানবো কী কারণে চেক ডিজঅনারের মামলা করা যায় না। না করা গেলে বিকল্প উপায় কী? চেকের মামলায় শেষ পর্যন্ত বাদি প্রতিকার পায় কি না? পেলেও কতটুকু পায় ইত্যাদি বিষয়।
চেকের মামলায় জিততে হলে নিম্নের উপাদানগুলো থাকতেই হবে:১. ব্যাংক হিসাবটি চেক ইস্যুকারীর হতে হবে।২. চেকের স্বাক্ষর অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের হতে হবে।৩. চেকটি অপর্যাপ্ত স্থিতির কারণে ডিজঅনার হতে হবে।৪. চেক প্রদানের তারিখ থেকে ৬ মাসের মধ্যে ডিজঅনার হতে হবে।৫. ডিজঅনারের ৩০ দিনের মধ্যে নোটিশ দিতে হবে।৬. নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিন পর মামলা করতে হবে।
যেসব বিষয় না থাকলে চেকের মামলায় প্রতিকার পাওয়া যায় না:১. যেদিন দাতা চেক ইস্যু করলেন; সেদিন থেকে ৬ মাস পর চেক ব্যাংকে উপস্থাপন করে মামলা করলে।২. ডিজঅনারের ৩০ দিন পর নোটিশ দিয়ে মামলা করলে।৩. নোটিশের মেয়াদ ৩০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই মামলা করলে।৪. স্টপ পেমেন্ট, সিগনেচার ডিফার, অ্যাকাউন্ট ক্লোজ ইত্যাদি অনিয়মের কারণে চেক ডিজঅনার হলে মামলা করে প্রতিকার পাওয়া যায় না।
Advertisement
যে ব্যাংকের চেক অর্থাৎ যে ব্যাংকে চেক ডিজঅনার হয়েছে; সেই ব্যাংক যে বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এলাকায় অবস্থিত; সেখানে মামলা দায়ের করতে হবে।
কিন্তু সম্প্রতি মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, যে স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যে ব্যাংকে চেক ডিজঅনার হয়েছে, যে জেলা থেকে আইনগত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং যে স্থানে বাদী বা পাওনাদার বসবাস করে। এমন আঞ্চলিক অধিক্ষেত্রের (Teritorial Jurisdiction) যে কোনো একটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চেক ডিজঅনারের প্রতিকার চেয়ে মামলা দায়ের করতে হবে।
মামলার শাস্তি কীএনআই অ্যাক্ট ১৮৮১ এর সর্বশেষ সংশোধনী মোতাবেক চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করে চেকে উল্লেখিত টাকার ৩ গুণ জরিমানা এবং ১ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে।
লেখক: সদস্য, ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ বার।
Advertisement
এসইউ/জিকেএস