দেশজুড়ে

নিষিদ্ধ সময়ে পদ্মার পাড়ে ইলিশের হাট

৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকলে মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মার পাড়ে নিয়মিত হাট বসে। ক্রেতারাও দল বেধে এখানে ইলিশ কিনতে আসেন।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় কেনাবেচা হচ্ছে ইলিশ। ভোরে, বিকেল ও সন্ধ্যায় দেদারছে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। যদিও সরকারিভাবে ১২ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ শিকার, সংরক্ষণ, বিপণন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

এদিকে মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মানদীতে শিবচর উপজেলা মৎস্য অফিস, প্রশাসন, নৌপুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করছেন। ইতোমধ্যে জেলে আটক, লাখ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ, ট্রলার জব্দ, জরিমানা করা হয়। তবুও জেলেরা কৌশলে মাছ ধরে তা পদ্মার পাড়েই বিক্রি করছে।

এসব হাট ঘুরে দেখা যায়, বড় আকারের ইলিশ ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ইলিশ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা এবং ছোট সাইজের ইলিশ মাছ ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

মাছ কিনতে আসা শাহিন হাওলাদার বলেন, এখানে কমদামে তাজা ইলিশ পাওয়া যায়। তাই ইলিশ মাছ কিনতে এসেছি। দাম কম থাকায় ১০ কেজি কিনেছি।

নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, এখন জালে খুব সহজেই মাছ ধরা পড়ে। বড় বড় ইলিশ মাছ। যদিও সরকার ইলিশ মাছ ধরতে নিষেধ করেছে। তবুও লাভের আশায় ও সংসারের খরচ যোগার করার জন্য চুরি করে মাছ ধরছি। সে মাছ পদ্মার পাড়েই বিক্রি করি।

মাদারীপুরের ইতিহাস গবেষক সুবল বিশ্বাস বলেন, শুধু জেলেদের জেল-জরিমানা করলেই হবে না। যারা মাছ কিনছেন, তাদেরও জেল-জরিমানা হওয়া উচিত। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সেসব স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

মাদারীপুরের সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য এইচ ই যাসচু বলেন, মাত্র ২২দিন ইলিশ বেচাকেনা বন্ধ থাকলেও সচেতনতার অভাব সেটি হচ্ছে না। মা ইলিশ রক্ষায় সবাই এগিয়ে না আসলে আগামীতে মাছ কমে যাবে। প্রজনন মৌসুমে কঠোরভাবে মা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসনকে কাজ করে যেতে হবে।

Advertisement

এ বিষয়ে শিবচর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম বলেন, ইলিশ বিক্রির কথা জানতে পেরেছি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পদ্মার পাড়ে হাট বসে। সেগুলো চিহ্নিত করে যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করে দেওয়া হবে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতিদিন শিবচর উপজেলার পদ্মা নদীতে উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য অফিস, নৌপুলিশের অভিযান চালিয়ে জেলেদের আটক, জরিমানাসহ বিপুল পরিমাণ কারেন্টজাল জব্দ করা হচ্ছে। তবুও মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে না। জানতে পেরেছি পদ্মার পড়ে প্রতিদিন মাছ বেচাকেনা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/আরএইচ/জিকেএস